দশম শ্রেণীর ইতিহাস ( পঞ্চম অধ্যায়)

          



     #  ১ নম্বরের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর#


১) ইউরোপে কে প্রথম ছাপাখানা বা মুদ্রণ শিল্পের সূত্রপাত ঘটান?

👉 জোহান্স গুটেনবার্গ।

২) জোহান্স গুটেনবার্গ কবে কোথায় ছাপাখানা স্থাপন করেন?

👉1438 খ্রীঃ, জার্মানির মেইন্জ শহরে।

৩) গুটেনবার্গের ছাপাখানা থেকে প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম কি?

👉 গুটেনবার্গের বাইবেল(1454 খ্রীঃ)।

৪)"প্রিন্টিং ইন ক্যালকাটা" পুস্তিকাটি কে কবে রচনা করেন?

👉গ্রাহাম শ, 1800 খ্রীঃ।

৫) ছাপাখানার জনক কাকে বলা হয়?

👉 জোহান্স গুটেনবার্গ।

৬) বাংলার প্রথম সাপ্তাহিক সাময়িক পত্রিকার নাম কী?

👉সমাচার দর্পন।

৭) শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কবে স্থাপিত হয়?

👉1800 খ্রীঃ।

৮) শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কে অনুসরণ করে কোন কোন স্থানে ছাপাখানা স্থাপিত হয়?

👉 হুগলি জেলার উত্তরপাড়া, বালি, বলাগড়, ভদ্রেশ্বর, চন্দননগর প্রভৃতি স্থানে।

৯) ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 1817 খ্রিস্টাব্দে, ডেভিড হেয়ার।

১০) ভারতের কোথায় এবং কবে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়?

👉 1556 খ্রিস্টাব্দে, গোয়ায়।

১১) ভারতে কারা প্রথম ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন?

👉 পর্তুগিজরা।

১২) কলকাতায় প্রথম কে এবং কবে ছাপাখানা তৈরি করেছিলেন?

👉 1778 খ্রিস্টাব্দে, জেমস অগাস্টাস হিকি।

১৩) কলকাতায় ছাপাখানা থেকে কোন সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 জেমস অগাস্টাস হিকি সম্পাদিত বেঙ্গল গেজেট (1780 খ্রীঃ)।

১৪) কোন দেশে প্রথম ছাপা বই প্রকাশিত হয়?

👉 জার্মানি।

১৫) পর্তুগিজ মিশনারিরা ভারতের কোথায় প্রথম ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন?

👉গোয়া।

১৬) বাংলা ভাষায় প্রথম মাসিক সংবাদপত্রের নাম কি?

👉 দিগদর্শন।

১৭) দিগদর্শন পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

👉জে.সি. মার্শম্যান।

১৮) দিগদর্শন পত্রিকা কবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 1818 খ্রিস্টাব্দে।

১৯) চুঁচুড়ায় কে কবে প্রথম মুদ্রণ যন্ত্র বা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 চার্লস উইলকিন্স, 1778 খ্রীঃ।

২০) শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকার নাম কি?

👉 সমাচার দর্পণ।

২১) সমাচার দর্পণ পত্রিকা কবে প্রথম প্রকাশিত হয়?

👉1818 খ্রিস্টাব্দে।

২২) সমাচার দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

👉জে.সি. মার্শম্যান।

২৩) ছাপাখানার জনক বা মুদ্রণ শিল্পের জনক কাকে বলা হয়?

👉 জোহান্স গুটেনবার্গ।

২৪) বাংলা হরফের প্রথম কারিগর কে ছিলেন?

👉 পঞ্চানন কর্মকার।

২৫)"ইন্ডিয়া গেজেট" পত্রিকা কবে প্রথম প্রকাশিত হয়?

👉1780 খ্রিস্টাব্দে

২৬) ইন্ডিয়া গেজেট পত্রিকার প্রকাশক কারা ছিলেন?

👉 বার্নার্ড মেসেনিক ও পিটার রিড।

২৭) ভারতের দ্বিতীয় সংবাদপত্রের নাম কি?

👉 ইন্ডিয়া গেজেট।

২৮) ইন্ডিয়া গেজেট পত্রিকার অপর নাম কি?

👉 Calcutta Public Advertiser.

২৯) ইন্ডিয়া গেজেট পত্রিকার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?

👉 বার্নাড মেসেনিক।

৩০) কোন গ্রন্থ ছাপার জন্য ভারতে প্রথম বাংলা হরফ তৈরি করা হয়েছিল?

👉নাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেদের বাংলা ব্যকরণ গ্রন্থ "এ গ্রামার অফ দি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গয়েজ"।

৩১) কোন ছাপাখানা প্রথম সরকারি ছাপাখানার স্বীকৃতি লাভ করে?

👉 চুঁচুড়ার ছাপাখানা।

৩২) শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉1800 খ্রীঃ।

৩৩) শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা গ্রন্থের নাম লেখ।

👉 হিতোপদেশ।

৩৪)"বেঙ্গল গেজেটি" প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা কে?

👉 গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।

৩৫) ভারতে বাংলা অক্ষরে প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থটির নাম কি?

👉"এ গ্রামার অফ দি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গয়েজ"।

৩৬)👉"এ গ্রামার অফ দি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গয়েজ" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉ন্যাথানিয়েলের ব্রাসি হালহেদ।

৩৭)"এ গ্রামার অফ দি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গয়েজ" গ্রন্থটি কবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉1778 খ্রিস্টাব্দে।

৩৮)"এ গ্রামার অফ দি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গয়েজ" গ্রন্থটি প্রথম কোথা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 হুগলিতে মি.অ্যান্ডুজের ছাপাখানা থেকে।

৩৯) কোন বাংলা গ্রন্থে সর্বপ্রথম বিচল হরফ বা মুভেবল হরফ ব্যবহৃত হয়েছিল।

👉)"এ গ্রামার অফ দি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গয়েজ"।

৪০) ভারতের বাইরে  প্রথম কবে বাংলা ভাষায় গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল?

👉1743 খ্রিস্টাব্দে। এই সময় পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে (১) কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ বা বেদ, (২) ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক সংবাদ (৩) বাংলা ব্যাকরণ ও পর্তুগিজ-বাংলা শব্দকোষ--এই গ্রন্থ তিনটি প্রকাশিত হয়েছিল।

৪১) বাংলা ভাষায় "কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ বা বেদ" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉ম্যানুয়েল-দ্য-আস্-সুম্প-সাম।

৪২) বাংলা ভাষায় "বাংলা ব্যাকরণ ও পর্তুগিজ-বাংলা শব্দকোষ"গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉ম্যানুয়েল-দ্য-আস্-সুম্প-সাম।

৪৩) বাংলা ভাষায় "ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক সংবাদ" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉দোম অন্তিনিয় দো রোজারিও।

৪৪) বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক কাকে বলা হয়?

👉 চার্লস উইলকিন্স।

৪৫)ধাতু নির্মিত সঞ্চালন যোগ্য বাংলা মুদ্রাক্ষরের জন্মদাতা কাকে বলা হয়?

👉 চার্লস উইলকিন্স।

৪৬) ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 আঠারোশো খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলি।

৪৭) বাইবেলের প্রথম বঙ্গানুবাদ "মঙ্গল সমাচার মতীয়ের রচিত" কবে কোন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রেস থেকে, 1800 খ্রিস্টাব্দে।

৪৮) হিন্দুস্থানী প্রেস কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 গিলক্রিস্ট, 1802 খ্রিস্টাব্দে।

৪৯)পার্শিয়ান প্রেস কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉ম্যাথু ল্যাম্পসডেন, 1805 খ্রিষ্টাব্দে।

৫০) সংস্কৃত প্রেস কে কবে স্থাপন করেন?

👉 1807 খ্রিস্টাব্দে, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সংস্কৃত শিক্ষক বাবুরাম।

৫১) কলকাতায় সংস্কৃত কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1824 খ্রিস্টাব্দে।

৫২) বাংলা ভাষায় প্রথম নোট বই কে কবে প্রথম প্রকাশ করেছিলেন?

👉 মধুসূদন মল্লিক, 1852 খ্রিস্টাব্দে।

৫৩) বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম নোট বইটির নাম কি?

👉 মল্লিকের ততীয় ভাগ ইংলিশ রিডারের অর্থপুস্তক।

৫৪) সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1862 খ্রিস্টাব্দে।

৫৫) সেন্ট পলস কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉1865 খ্রিস্টাব্দে।

৫৬) সিটি কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1878 খ্রিস্টাব্দে।

৫৭) রিপন কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1884 খ্রিস্টাব্দে।

৫৮) রিপন কলেজের বর্তমান নাম কি?

👉 সুরেন্দ্রনাথ কলেজ।

৫৯) বঙ্গবাসী কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1887 খ্রিস্টাব্দে।

৬০) সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত।

৬১) সংবাদ প্রভাকর পত্রিকাটি কবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 1831 খ্রিস্টাব্দে।

৬২) সাপ্তাহিক পত্রিকার সংবাদ প্রভাকর কবে দৈনিক পত্রিকায় পরিণত হয়?

👉 1839 খ্রিস্টাব্দে

৬৩) আনন্দবাজার পত্রিকায় কবে প্রথম লাইনো টাইপ ব্যবহার করা হয়েছিল?

👉1935 খ্রিস্টাব্দের 28শে সেপ্টেম্বর।

৬৪)কবে আধুনিক বাংলা মুদ্রণ প্রকাশনের সূচনা হয়?

👉 1935 খ্রিস্টাব্দে।

৬৫)"বঙ্গদর্শন" পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

👉 বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

৬৬) বঙ্গদর্শন পত্রিকা কবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 1872 খ্রিস্টাব্দে।

৬৭) বাংলার প্রথম ঐতিহাসিক সাময়িক পত্রের নাম কি?

👉 বঙ্গদর্শন পত্রিকা।

৬৬)"বর্ণপরিচয়" পুস্তিকা কে রচনা করেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

৬৭) ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত "বর্ণপরিচয় পুস্তিকা কবে প্রথম প্রকাশিত হয়?

👉 1855 খ্রিস্টাব্দে।

৬৬)"শিশু শিক্ষা" গ্রন্থটি কে কবে রচনা করেন?

👉 মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার, 1850 খ্রীঃ।

৬৭) পূর্ব বাংলার কোথায় এবং কবে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়?

👉 রংপুরে, 1847 খ্রিস্টাব্দে।

৬৮)বিদ্যাসাগর সাট বলতে কী বোঝো?

👉ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা বর্ণমালার যে যথাযথ রুপদান করেন, তাকে বাংলা মুদ্রণে বিদ্যাসাগর সাট বলা হয়।

৬৯) বটতলা সাহিত্য বলতে কী বোঝো?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক বাংলা বর্ণমালার যথাযথ রূপ প্রদানের আগে থেকে 1840-1870 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বটতলার বেসাতি নামে বাংলা প্রকাশনার যে ধারা চলেছিল, তাকে বটতলা সাহিত্য বলা হত।

৭০) বটতলা সাহিত্য ধারার দুজন বিখ্যাত প্রকাশকের নাম লেখ।

👉বিশ্বম্ভর দেব ও ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

৭১) বটতলা সাহিত্যের কয়েকটি উদাহরণ দাও।

👉নববাবু বিলাস  কলিকাতা রঙ্গালয়, করুণানিধান বিলাস, চন্ডীমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, বিদ্যাসুন্দর ইত্যাদি।

৭২) অন্নদামঙ্গল গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉রায়গুনাকর ভারতচন্দ্র।

৭৩)"আলালের ঘরের দুলাল" গ্রন্থটি কে কবে রচনা করেন?

👉 প্যারীচাঁদ মিত্র, 1858 খ্রিস্টাব্দে।

৭৪)"ফুলমণি ও করুণার বিবরণ" কে কবে রচনা করেন?

👉শ্রীমতি মল্যেন্স, 1852 খ্রিষ্টাব্দে।

৭৫) সংস্কৃত প্রেস নামক ছাপাখানা কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও মদনমোহন তর্কালঙ্কার, 1847 খ্রিষ্টাব্দে। এটি পটলডাঙ্গা 62নং আমর্হাস্ট স্ট্রিটে গড়ে উঠেছিল।

৭৬) আধুনিক বাংলা বই ব্যাবসার প্রথম পথ প্রদর্শক কাকে বলা হয়?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

৭৭)কলেজ স্ট্রীটে "সংস্কৃত প্রেস ডিপজিটারি" নামে প্রথম বইয়ের দোকান কে খুলেছিলেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

৭৮)কলিকাতা পুস্তকালয় (সুকিয়া স্ট্রীটে) নামক বইয়ের দোকান কে খুলেছিলেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

৭৯) বিদ্যাবণিক কাকে বলা হয়?

👉 ছাপাখানার ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বিদ্যাবনিক বলা হয়।

৮০)বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভা কবে গঠিত হয়?

👉1912 খ্রীঃ।

৮১)বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভার প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?

👉গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়।

৮২)বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা সভার প্রথম সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন?

👉শরৎকুমার লাহিড়ী।

৮৩) ইউ. রায়. অ্যান্ড সন্স কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী,1895 খ্রিস্টাব্দে।

৮৪) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কবে কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

👉 1863 খ্রিস্টাব্দের 12 ই মার্চ বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের মলুয়াতে।

৮৫)স্লেভ ট্রেড ইন আসাম /Slave Trade in Assam গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী।

৮৬) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছেলের নাম কি?

👉 সুকুমার রায়।

৮৬) অস্কারজয়ী চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদার নাম কি?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৮৭)থ্যাকার, স্পিংক অ্যান্ড কোম্পানি কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত?

👉 বাণিজ্যিক ছাপার কাজ।

৮৮) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী উন্নত মানের ছাপার কাজ শেখার জন্য কোন কোম্পানি থেকে মূল্যবান বইপত্র নিয়ে পড়াশোনা করতেন?

👉 লন্ডনের পেনরোজ কোম্পানি।

৮৯) ভারতে প্রসেস শিল্প বা প্রসেস ওয়ার্কের উদ্ভাবক কাকে বলা হয়?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯০)প্রসেস শিল্প বলতে কী বোঝো?

👉 প্রসেস ক্যামেরা নিয়ে ছবির নেগেটিভকে আরো উৎকৃষ্টমানের করে বহু ছবিকে একইসঙ্গে বইতে ছাপার প্রক্রিয়াকে প্রসেস ওয়ার্ক বা প্রসেস শিল্প বলে।

৯২) ভারতে হাফটোন ব্লক পদ্ধতি কে আবিষ্কার করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯৩) হাফটোন ব্লক পদ্ধতি কি?

👉 ফটোগ্রাফকে বইপত্রে ছাপার উপযুক্ত করে ব্লক তৈরীর পদ্ধতি কে হাফটোন ব্লক পদ্ধতি বলে।

৯৪) ভারতে ডায়াফ্রাম যন্ত্র কে আবিষ্কার করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯৫) ভারতের ডুয়োটাইপ যন্ত্র কে আবিষ্কার করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯৬) ভারতে স্ক্রিন অ্যাডজাস্টার যন্ত্র কে আবিষ্কার করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯৭) ভারতে টিন্ট প্রসেস কে আবিষ্কার করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯৮) কোন ভারতীয় ব্যক্তির নামে রে টিন্ট প্রসেস ও রে স্ক্রিন অ্যাডজাস্টার যন্ত্রের নামকরণ হয়েছে?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

৯৯) কোন ভারতীয় প্রথম বইয়ের ভেতরে রঙিন ছবি ছাড়তে ষাট ডিগ্রী স্ক্রীন ও রি প্রিন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১০০) এশিয়ার প্রথম কোন বাঙালি সুন্দর রঙিন ছাপাখানা প্রবর্তন করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১০১) কোন বাঙালি রয়েল ফটোগ্রাফিক সোসাইটি ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন?

👉 সুকুমার রায়।

১০২) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রচিত প্রথম গ্রন্থের নাম কি?

👉 ছেলেদের রামায়ণ।

১০৩) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রচিত "ছেলেদের রামায়ণ" গ্রন্থটি কোন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 সিটি বুক সোসাইটি।

১০৪) সিটি বুক সোসাইটি প্রকাশনা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?

👉 যোগীন্দ্রনাথ সরকার।

১০৫)"ছেলেদের মহাভারত" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১০৬)"ছেলেদের মহাভারত" গ্রন্থটি কোন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 ইউ. রায়. এন্ড সন্স।

১০৭)ইউ. রায়. এন্ড সন্স প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ।

👉 ছেলেদের মহাভারত, টুনটুনির বই, গুপী গায়েন বাঘা বায়েন, সেকালের কথা, আবোল তাবোল, হ য ব র ল, পাগলা দাশু ইত্যাদি।

১০৮)"সন্দেশ" পত্রিকা প্রথম কে কবে প্রকাশ করেছিলেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, 1913 খ্রিস্টাব্দে।

১০৯)"টুনটুনির বই" কার লেখা?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১১০)"গুপী গায়েন বাঘা বায়েন" গ্রন্থটি কার লেখা?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১১১)"গুপি গায়েন বাঘা বায়েন" চলচ্চিত্রটির পরিচালক কে?

👉 সত্যজিৎ রায়।

১১২)"সেকালের কথা" গ্রন্থটির রচয়িতা কে?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১১৩)"সহজ বেহালা শিক্ষা" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১১৪)"শিক্ষক ব্যতিরেকে হারমোনিয়াম"গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১১৫)"ভারতীয় সংগীত" গ্রন্থটি রচয়িতা কে?

👉 উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

১১৬) সুকুমার রায় রচিত কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ?

👉 আবোল তাবোল, হ য ব র ল, পাগলা দাশু ইত্যাদি।

১১৭) এশিয়ার প্রথম ডিগ্রী কলেজ কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 শ্রীরামপুর।

১১৮) ছাপাখানার প্রথম বাঙালি ব্যবসায়ী কে ছিলেন?

👉 গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।

১১৯)"বার্তাবহ যন্ত্র" নামে ছাপাখানা কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

👉 রংপুর।

১২০)কোন গ্রন্থটিকে বাংলার প্রথম প্রাইমার গ্রন্থ বলা হয়?

👉 শিশু শিক্ষা গ্রন্থ।

১২১) প্রথম সচিত্র বাংলা বইয়ের নাম কি?

👉 অন্নদামঙ্গল।

১১২)কোন ছাপাখানায় কলকাতার প্রথম ক্যালেন্ডার মুদ্রিত হয়েছিল?

👉 জেমস অগাস্টাস হিকির ছাপাখানা।

১১৩) রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র অন্নদামঙ্গল গ্রন্থটি কে প্রকাশ করেছিলেন?

👉 বেঙ্গল গেজেটি পত্রিকার সম্পাদক গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।

১১৪) বাংলার কোথায় প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

👉 হুগলি।

১১৫)"বাংলা শিক্ষাগ্রন্থ" কে কবে রচনা করেন?

👉 রাধাকান্ত দেব, 1821 খ্রীঃ।

১১৬)"সংক্ষিপ্ত বাংলা শিক্ষা গ্রন্থ"কে কবে রচনা করেন?

👉 রাধাকান্ত দেব, 1827 খ্রিস্টাব্দে।

১১৭)"প্রতাপাদিত্য চরিত্র" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 রামরাম বসু।

১১৮)"পাখি সব করে রব" কবিতাটি কার লেখা?

👉 মদনমোহন তর্কালঙ্কার।

১১৯)"লিপিমালা" গ্রন্থটি কার লেখা?

👉 রামরাম বসু।

১২০)"বিজ্ঞান রহস্য"প্রবন্ধটি কে রচনা করেন?

👉 বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

১২১)"চন্দ্রোদয় যন্ত্র" নামক ছাপাখানা কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 মনোহর কর্মকার।

১২২)"গুপ্ত যন্ত্র"নামক ছাপাখানা কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 দুর্গাচরণ গুপ্ত।

১২৩) গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা কোন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয়?

👉 গুপ্ত যন্ত্র ছাপাখানা থেকে।

১২৪)"গুপ্ত ব্রাদার্স" নামক বইয়ের দোকান কে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 দুর্গাচরণ গুপ্ত।

১২৫) স্কুল বুক প্রেস কে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 প্যারীচরণ সরকার।

১২৬)"বি.পি.এম" প্রেস কে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 বরদা প্রসাদ মজুমদার।

১২৭)"দেব সাহিত্য কুটির" এর প্রতিষ্ঠাতা কে?

👉 বরদা প্রসাদ মজুমদার।

১২৮) ন্যাশনাল প্রেস কে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 নবগোপাল মিত্র।

১২৯)"জেনারেল প্রিন্টিং" নামক ছাপাখানা কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 বেনীমাধব ভট্টাচার্য।

১৩০)"চৈতন্যচন্দ্রোদয়"নামক ছাপাখানা কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 মধুসূদন শীল।

১৩১)"কমলালয়"নামক ছাপাখানা কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 দীননাথ দাস।

১৩২)"অমৃতবাজার পত্রিকা" কবে এবং কাদের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 1868 খ্রিস্টাব্দে, শিশির কুমার ঘোষ ও মতিলাল ঘোষের উদ্যোগে।

১৩৩) বাংলায় কে প্রথম মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন?

👉 রেভারেন্ড মে।

১৩৪)"নারী শিক্ষা ভান্ডার" কে স্থাপন করেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

১৩৫)"বেদান্ত গ্রন্থ" কে রচনা করেছিলেন?

👉 রাজা রামমোহন রায়।

১৩৬)"বত্রিশ সিংহাসন" কার লেখা?

👉 মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার।

১৩৭)"তত্ত্ববোধিনী" পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

👉 দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৩৮) ইংল্যান্ডে হেইলবেরি কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1806 খ্রিস্টাব্দে।

১৩৯)"ইতিহাসমালা" গ্রন্থটি রচয়িতা কে?

👉 উইলিয়াম কেরি।

১৪০)"অ্যান ইনকোয়ারি" গ্রন্থটি কে প্রকাশ করেন?

👉 উইলিয়াম কেরি।

১৪১) কলকাতা স্কুল বুক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত একটি গ্রন্থের নাম লেখ।

👉 হিতোপদেশ।

১৪২)"কথোপকথন" গ্রন্থটি কে কবে প্রকাশ করেন?

👉 উইলিয়াম কেরি, 1801 খ্রিস্টাব্দে।

১৪৩)"কথামালা" কে রচনা করেছিলেন?

👉 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

১৪৪) হিন্দু কলেজ কে কাদের মস্তিষ্কজাত সন্তান বলা হয়?

👉 ডেভিড হেয়ার ও রাজা রামমোহন রায়।

১৪৫) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 কর্নেল রবার্ট কিড, 1787 খ্রীঃ।

১৪৬) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রথম সুপার কে ছিলেন?

👉কর্নেল রবার্ট কিড(অবৈতনিক সুপার)।

১৪৭) ভারতীয় উদ্ভিদ বিদ্যার জনক কাকে বলা হয়?

👉 ডঃ উইলিয়াম রক্সবার্গ (শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের সুপার ছিলেন)।

১৪৮) সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉1767 খ্রিস্টাব্দে।

১৪৯) ভারতের প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল কে ছিলেন?

👉জেমস রেনেল।

১৫০) এশিয়াটিক সোসাইটি কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 1784 খ্রিস্টাব্দে, স্যার উইলিয়াম জোন্স।

১৫১) এশিয়াটিক সোসাইটির প্রথম ভারতীয় সভাপতি কে ছিলেন?

👉 রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র।

১৫২) রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র কবে এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন?

👉1885 খ্রীঃ।

১৫৩)"বিদ্যাহারাবলী" কে রচনা করেন?

👉 ফেলিক্স কেরি।

১৫৪) বিদ্যাহারাবলী কবে প্রকাশিত হয়েছিল?

👉1920 খ্রীঃ।

১৫৫) বাংলা ভাষায় প্রথম বিশ্বকোষীয় রচনার নাম কি?

👉 বিদ্যাহারাবলী।

১৫৬) রসায়নবিদ্যা বিষয়ক বাংলা বইয়ের পথিকৃৎ কাকে বলা হয়?

👉জন ম্যাক।

১৫৭)"Principles of Chemistry" (ক্রিমিয়াবিদ্যার সার) গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉জন ম্যাক (1834 খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল)।

১৫৮)"Elements of Natural Philosophy and Natural History" (পদার্থবিদ্যাসার) গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 উইলিয়াম ইয়েটস। (1825 খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল)।

১৫৯)"Introduction to Astrology" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉উইলিয়াম ইয়েটস। (1833 খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল)।

১৬০)"ভূগোল ও জ্যোতিষ" গ্রন্থটি কে রচনা করেছিলেন?

👉 মিশনারী পিয়ার্সন।

১৬১) বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম প্রাণী বিশ্বকোষ বা অ্যানিমল এনসাইক্লোপিডিয়ার নাম কি?

👉 পশ্বাবলী।

১৬২)"পশ্বাবলী" প্রাণী বিশ্বকোষ কবে কোন সংস্থা প্রকাশ করেছিল?

👉 স্কুল বুক সোসাইটি, 1822 খ্রিস্টাব্দে।

১৬৩) বাংলা ভাষায় " জ্যামিতি" নামটি কে দিয়েছিলেন?

👉 রাজা রামমোহন রায়।

১৬৪) অধ্যাপক ক্ষিতিমোহন সেন কাকে "ভারতের বিজ্ঞান চর্চার আদি গুরু" বলে অভিহিত করেছেন?

👉 রাজা রামমোহন রায়।

১৬৫)হার্টস বেঙ্গেলেনসিস" কে রচনা করেছিলেন?

👉 উইলিয়াম রক্সবার্গ।

১৬৬)হার্টস বেঙ্গেলেনসিস" কে সম্পাদনা করেছিলেন?

👉 উইলিয়াম কেরি।

১৬৭)কৃষি উদ্যান পালন সমিতি/এগ্রি-হর্টি-কালচারাল সোসাইটি কে কবে গঠন করেন?

👉 শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের পরিদর্শক ওয়ালিক, 1820 খ্রিস্টাব্দে।

১৬৮) বাংলার বিশ্বকর্মা কাকে বলা হয়?

👉 পঞ্চানন কর্মকার।

১৬৯)জন ম্যাকের লেখা "Principles of Chemistry" গ্রন্থটির বঙ্গানুবাদ কে করেছিলেন?

👉 ফেলিক্স কেরি।

১৭০) জ্যামিতি বিষয়ক গ্রন্থ " দ্রাঘিজ্যা" কে রচনা করেন?

👉 রাজা রামমোহন রায়।

১৭১) তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

👉 অক্ষয় কুমার দত্ত।

১৭২) রাজা রামমোহন রায়ের জ্যামিতি বিষয়ক গ্রন্থ " দ্রাঘিজ্যা" প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 সংবাদ কৌমুদী।

১৭৩)"বাহ্যবস্তুর সহিত প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার" নামক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রবন্ধটি কে রচনা করেন?

👉 অক্ষয় কুমার দত্ত।

১৭৪)"বাহ্যবস্তুর সহিত প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার" নামক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রবন্ধটি কোন পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা।

১৭৫) বাংলা ভাষায় "পদার্থবিদ্যা" গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

👉 অক্ষয় কুমার দত্ত।

১৭৬) কোন বাঙালি সর্বপ্রথম এভারেস্টের উচ্চতা পরিমাপ করেছিলেন?

👉 রাধানাথ শিকদার।

১৭৭) কার পরামর্শে জামসেদজী টাটা টাটা আয়রন এন্ড ষ্টীল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 প্রমথনাথ বসু।

১৭৮) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত "বিজ্ঞান রহস্য"প্রবন্ধটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 বঙ্গদর্শন পত্রিকা।

১৭৯) রুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1847 খ্রিস্টাব্দে।

১৮০) বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, 1901 খ্রিস্টাব্দে।

১৮১)"হিস্ট্রি অফ হিন্দু কেমিস্ট্রি"গ্রন্থটি কে কবে রচনা করেন?

👉 আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়,  1902 খ্রিস্টাব্দে।

১৮২)"জাতীয় সাবান ও ঔষধ কারখানা" কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 ডঃ নীলরতন সরকার।

১৮৩)"সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স"কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 মেঘনাথ সাহা, 1938 খ্রিস্টাব্দে।

১৮৪)"ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট" কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ, 1931 খ্রিস্টাব্দে।

১৮৫) খাবারে ভেজাল নির্ণয়ের রাসায়নিক পদ্ধতি কে আবিষ্কার করেছিলেন?

👉 আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়।

১৮৬) মারকিউরাস নাইট্রাইট কে আবিষ্কার করেছিলেন?

👉 আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়।

১৮৭) রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉 1914 খ্রিস্টাব্দে।

১৮৮) ভারতের সর্বপ্রথম বিজ্ঞান পত্রিকার নাম কি?

👉 Journal of Indian Chemical Society.

১৮৯)"Journal of Indian Chemical Society" নামক ভারতের প্রথম বিজ্ঞান পত্রিকা কবে, কার  প্রচেষ্টায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল?

👉 আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রচেষ্টায়, 1924 খ্রিস্টাব্দে, রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজ থেকে।

১৯০) তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ কে আবিষ্কার করেছিলেন?

👉 আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।

১৯১) কে প্রথম প্রমাণ করেছিলেন যে উদ্ভিদের প্রাণ আছে?

👉 আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।

১৯২)"বসু বিজ্ঞান মন্দির" কে কবে প্রতিষ্ঠা?

👉 আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, 1917 খ্রিস্টাব্দে।

১৯৩)"জেনারেল হসপিটাল" কবে কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

👉 1768 খ্রিস্টাব্দে, কলকাতায়।

১৯৪) কলকাতার জেনারেল হসপিটালের বর্তমান নাম কি বর্তমান নাম কি?

👉এস এস কে এম হসপিটাল।

১৯৫) স্কুল ফর নেটিভ ডক্টরস" কবে কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

👉1822 খ্রিষ্টাব্দে, দেশীয় জনসাধারণের মধ্য থেকে চিকিৎসক তৈরীর উদ্দেশ্যে।

১৯৬)"স্কুল ফর নেটিভ ডক্টরস" এর সুপারিনটেনডেন্ট কে ছিলেন?

👉ডা: ব্রেটন।

১৯৭) মেডিকেল কলেজ অফ বেঙ্গল কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉1835 খ্রিস্টাব্দে, লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক।

১৯৮)মেডিকেল কলেজ অফ বেঙ্গলের বর্তমান নাম কি?

👉 কলকাতা মেডিকেল কলেজ।

১৯৯) কোন বাঙালি সর্বপ্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেছিলেন?

👉 মধুসূদন গুপ্ত।

২০০) কবে এবং কার তত্ত্বাবধানে মধুসূদন গুপ্ত সর্বপ্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেছিলেন?

👉 1836 খ্রিস্টাব্দে, ডা: গুডিভ।

২০১) ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS) কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 ড. মহেন্দ্রলাল সরকার,1876 খ্রিষ্টাব্দে।

২০২) ভারতের সর্বপ্রাচীন সায়েন্সের মৌলিক গবেষণা কেন্দ্রের নাম কি?

👉ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS)।

২০৩)সি.ভি.রমন কবে কোন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিল?

👉 পদার্থবিদ্যায় (রমন এফেক্ট আবিষ্কারের জন্য) 1930 খ্রিস্টাব্দে।

২০৪)সি.ভি.রমন কবে রমন এফেক্ট আবিষ্কার করেছিলেন?

👉1928 খ্রিষ্টাব্দে।

২০৫) ভারতের সর্বপ্রথম সম্পূর্ণরূপে দেশীয় ও জাতীয় বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের নাম কি?

👉ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS)।

২০৬)ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS) এর প্রথম সাম্মানিক সম্পাদক কে ছিলেন?

👉ড. মহেন্দ্রলাল সরকার।

২০৭)ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS) এর প্রথম ভারতীয় অধিকর্তা বা প্রেসিডেন্ট কে ছিলেন?

👉রাজা প্যারীমোহন মুখার্জি।(1912 খ্রীঃ)।

২০৮)ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS) এর নিজস্ব বিজ্ঞান পত্রিকার নাম কি?

👉ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ফিজিক্স।

২০৮) প্রথম কোন ভারতীয় লন্ডনের রয়েল সোসাইটি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন?

👉 আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু (1920 খ্রিস্টাব্দে)।

২০৯) প্রথম মোশন ট্রাকের রেকর্ডিং পরীক্ষা কে করেছিলেন?

👉ড.ডি.এম.বোস ও ড.বিভা চৌধুরী।

২১০) উদ্ভিদের আয়োনোসিয়াল ফসফেট চক্র কে আবিষ্কার করেছিলেন?

👉বি.বি.বিশ্বাস।

২১১)"অব্যক্ত" গ্রন্থটি কে রচনা করেছিলেন?

👉 আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।

২১২) ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র কে আবিষ্কার করেছিলেন?

👉 আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।

২১৩) কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉1914 খ্রিস্টাব্দে, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

২১৪) কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের পোশাকি নাম কি?

👉 ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি।

২১৫) বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 সত্যেন্দ্রনাথ বসু।

২১৬) গোলদিঘির গোলামখানা কাকে বলা হয়?

👉 কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে।

২১৭)কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কে গোলদিঘির গোলামখানা বলে অভিহিত করেছিলেন?

👉 ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়।

২১৮) জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কবে কার উদ্যোগে গঠিত হয়?

👉 1906 খ্রিস্টাব্দের, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

২১৯)"জাতীয় শিক্ষা"কথাটি প্রথম কে ব্যক্ত করেছিলেন?

👉 প্রসন্নকুমার ঠাকুর।

২২০) জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রাথমিক সদস্য কতজন ছিল?

👉 92 জন।

২২১) জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?

👉 রাসবিহারী ঘোষ।

২২২) জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?

👉 হীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও আশুতোষ চৌধুরী।

২২৩)বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ কে ছিলেন?

👉 অরবিন্দ ঘোষ।

২২৪) সোসাইটি ফর প্রমোশন অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉1906 খ্রিস্টাব্দে, তারকনাথ পালিত।

২২৫) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট কে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉1906 খ্রিস্টাব্দে, তারকনাথ পালিত।

২২৬)বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট কবে যাদবপুরে স্থানান্তরিত হয়?

👉 1924 খ্রিস্টাব্দে।

২২৭) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের নাম কবে কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি হয়েছিল?

👉1928 খ্রিস্টাব্দে।

২২৮) বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের বর্তমান নাম কি?

👉 যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

২২৯) যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পূর্ব নাম কি ছিল?

👉 কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি।

২৩০) কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রীরা "টেক" নামে জার্নাল প্রকাশ করত?

👉কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি।

২৩১)জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল?

👉বিদেশি নিয়ন্ত্রণমুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করা।

২৩৪)কোন বাঙালি বিজ্ঞানী প্রথম বাষ্পীয় ইঞ্জিন তৈরি করেছিলেন?

👉 গোলক চন্দ্র নন্দী, 1827 খ্রিস্টাব্দে।

২৩৫)ভারতের প্রথম ইলেকট্রিক্যাল ও টেলিকম ইঞ্জিনিয়ার কাকে বলা হয়?

👉 শিব চন্দ্র নন্দী।

২৩৬) কোন বাঙালি ব্যক্তিত্ব গম ভাঙ্গনোর যন্ত্র ও যন্ত্র চালিত লাঙ্গল তৈরি করেছিলেন?

👉সীতানাথ ঘোষ।

২৩৭) বাংলার কোন ব্যক্তিত্ব দেশলাই শিল্পের কারখানা খুলেছিলেন?

👉 মহেন্দ্রচন্দ্র নন্দী।

২৩৮) বাংলায় কলের গান ও গানের রেকর্ড কে তৈরি করেছিলেন?

👉 হেমেন্দ্র মোহন বসু।

২৩৯) বাংলায় প্রথম সুগন্ধি তেলের কারখানা স্থাপন করেছিলেন?

👉 হেমেন্দ্র মোহন বসু।

২৪০) শান্তিনিকেতন আশ্রম কে, কবে এবং কোথায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, 1863খ্রীঃ, বীরভূমের ভুবন ডাঙ্গায় ছাতিম গাছের তলায়।

২৪১) শান্তিনিকেতন নামটি কে দিয়েছিলেন?

👉 দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

২৪১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বছর বয়সে এবং কার সঙ্গে প্রথম শান্তিনিকেতন এসেছিলেন?

👉 12 বছর বয়সে, তার বাবার সঙ্গে।

২৪২)শান্তিনিকেতনে সর্বপ্রথম ব্রহ্মচর্যাশ্রম বা পাঠভবন স্কুল কে কবে তৈরি করেছিলেন?

👉 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, 1901 খ্রিস্টাব্দে।

২৪৩) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা চিন্তর প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল?

👉 মানুষ তৈরি করা।

২৪৪) কে চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে "খোপওয়ালা বড় বাক্স" বলে অভিহিত করেছেন?

👉 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

২৪৫)"ছাতিমতলা" নামটি ভারতের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সঙ্গে সম্পর্কিত?

👉 শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।

২৪৬) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন?

👉 1913 খ্রিস্টাব্দে।

২৪৭) শান্তিনিকেতনের কলাভবন টি কবে তৈরি হয়েছিল?

👉1909 খ্রিস্টাব্দে।

২৪৮) শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের প্রিয় মাটির বাড়ি "শ্যামলী"র নকশা কে তৈরি করেছিলেন?

👉 সুরেন্দ্রনাথ কর।

২৪৯) "শান্তিনিকেতন ইজ ইন্ডিয়া"-উক্তিটি কার?

👉 মহাত্মা গান্ধী

২৫০) শ্রীনিকেতন কে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

২৫১) শ্রীনিকেতনের প্রথম ডিরেক্টর কে ছিলেন?

👉নাইট এলমহাস্ট।

২৫২) শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল?

👉 কৃষি, গো পালন ইত্যাদির মাধ্যমে পল্লী জীবনের শ্রী ফেরানো।

২৫২) শ্রীনিকেতন কবে কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

👉সুরুল গ্রামে, 1922 খ্রিস্টাব্দে।

২৫৩) শিক্ষাসত্র কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?

👉 1924 খ্রিস্টাব্দে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

২৫৪)শিক্ষাসত্র প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল?

👉গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে শিক্ষাদান করা।

২৫৫) বিশ্বভারতী কে কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

👉 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 1918 খ্রিস্টাব্দে 23 শে ডিসেম্বর।

২৫৬)বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সভা ও বিশ্বভারতী পরিষদ কবে গঠিত হয়?

👉 1921 খ্রিস্টাব্দে।

২৫৭)মোট কতজন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছিল?

👉 10 জন।

২৫৮)বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?

👉 ব্রজেন্দ্রনাথ শীল।

২৫৯)বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম অধ্যক্ষ কে ছিলেন?

👉 বিধুশেখর ভট্টাচার্য।

২৬০) কোন পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বপ্রথম "বিশ্বভারতী" শব্দটি উল্লেখ করেন?

👉"শান্তিনিকেতন" পত্রিকা।

২৬১) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

👉 1921 খ্রিস্টাব্দে।

২৬২)বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল?

👉প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ভাবাদর্শের ভিত্তিতে সর্ববিদ্যার প্রসার এবং বিশ্বমানব তৈরি।

২৬৩) মহর্ষি দাতব্য চিকিৎসালয় কে কোথায় গঠন করেছিলেন?

👉 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিলাইদহে।

২৬৩) বিশ্বভারতী কবে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে?

👉 1951 খ্রিস্টাব্দে।

২৬৪)বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য কে ছিলেন?

👉 ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু।

২৬৫)বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য কে ছিলেন?

👉 রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


  # সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রশ্নমান-২

1. শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের কাছ থেকে 1863 খ্রিস্টাব্দে 20 বিঘা জমি কেনেন। এখানে তিনি ‘শান্তিনিকেতন’ নামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠাকরেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন।

উদ্দেশ্যঃ-

a. প্রকৃতির কাছাকাছি আদর্শ পরিবেশের মধ্যে শিশুদের বড়ো করে তোলা।

b. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন ভারতের আশ্রমিক শিক্ষার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের শান্তিনিকেতনে রেখে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

এই বিদ্যালয়ে গতানুগতিক সময়তালিকার বিশেষ গুরুত্ব ছিল না। শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুসারে তা নির্ধারণ করা হত।

2. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কী উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়?

বিভিন্ন কারণে 1906 খ্রিস্টাব্দের 11 মার্চ গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ। যেমন-

a. বিদেশি শিক্ষা-সংস্কৃতি বর্জন করে জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান করা।

b. শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা দান করা ও দেশসেবার মনোভাব জাগিয়ে তোলা।

c. ব্রিটিশ শিক্ষা নীতির সমালোচনা করা।

d. মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

e. কার্লাইল সার্কুলার ও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বিরোধিতা করা ইত্যাদি ছিল এর উদ্দেশ্য।

3. বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল ?

জগদীশচন্দ্র বসু কর্তৃক প্রতিস্থিত বসু বিজ্ঞান মন্দির ছিল একটি গবেষণা কেন্দ্র। এখানে রসায়ন পদার্থবিদ্যা জীব বিদ্যা জৈব রসায়ন জৈব পদার্থ প্রভৃতি বিষয়ে গবেষণার জন্য এবং নতুন তত্ত্ব আবিষ্কারের জন্য 1917 সালে বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠত হয়।

4. কবে কার উদ্যোগে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৯০৬ খ্রীষ্টাব্দের ২৫ শে জুলাই তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট বা B.T.I . কারিগরি শিক্ষার মা্ন, উন্নয়ন এবং প্রসার ইত্যাদি ঘটাই ছিল এর উদ্দেশ্য।

5. ছাপাখানা বিস্তারে ইউ. রায় এন্ড সন্স এর ভূমিকা লেখ?

উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা সংসস্থার নাম হল ইউ. এন. রায় আন্ড সন্স। প্রসেসিং :- উপেন্দ্রকিশোর ফটোর নেগেটিভের মান উন্নত করা, প্রসেসিং, ক্যামেরা বিষয়ে কাজকর্মে মৌলিক অবদান রাখেন।

ব্লক তৈরি :- প্রথমে কাঠের ব্লক এবং সাদা-কালো ছবি, তারপর হাফটোন ব্লক ও রঙিন ছবি তৈরি করে মুদ্রণে অভিনবত্ব আনেন তিনি। 

ফটো এনগ্রেভিং ও লিথোগ্রাফি :- উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীর পুত্র সুকুমার রায় লন্ডনে ফটো এনগ্রেভিং ও লিথোগ্রাফি বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন এবং ছাপার মান আরও উন্নত করেন।

এইভাবে মুদ্রণশিল্পে ইউ রায় অ্যান্ড সন্স বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে। ছাপাখানাটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অত্যন্ত বিখ্যাত হয়ে ওঠে।

6. বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ?

উত্তর:: বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল-

a. প্রাচ্যের আদর্শ ও বাণীকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বয় সাধন করা,

b. প্রাচীন ও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় সাধন করা,

c. মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো,

d. শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারিক বিদ্যা শিক্ষা দান করা,

e. প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় সাধন করা, একে বিশ্ব মানবতার মিলনক্ষেত্রে ইত্যাদি রূপে গড়ে তোলাই ছিল এর উদ্দেশ্য।

7. কাকে কেন বিদ্যাবনিক বলা হয়?

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বিদ্যাবনিক বলা হয়। তিনি 1856 খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত প্রেসের মালিক হলে নিজের লেখা ও অন্যান্যদের লেখা বই ছাপান। বিদ্যাসাগর সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটরি, কলকাতা পুস্তকালয় নামে বইয়ের দোকান খোলেন। আধুনিক বাংলা বই ব্যবসার প্রথম পথপ্রদর্শক ছিলেন তিনি। তাই তিনি ''বিদ্যাবনিক'' নামে পরিচিত।

8. তারকানাথ পালিত বিখ্যাত কেন?

বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন শিক্ষাদরদী ও বিশিষ্ট আইনজীবী তারকনাথ পালিত তাদের মধ্যে অন্যতম।

কৃতিত্ব :- তারক নাথ পালিত ও স্যার রাসবিহারী ঘোরে অর্থ ও জমিদানের ফলে 1914 খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ ক্যাম্পাসটি তাই 'তারকনাথ পালিত শিক্ষা প্রাঙ্গণ' নামেই পরিচিত।

9. বিজ্ঞান চর্চার আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান লিখ?

স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন ভারতের একজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী। তিনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণার উদ্দেশ্যে 1917 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণা হত। তিনি ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করে প্রমাণ করেন যে, গাছের প্রাণ আছে। রেডিও সহ বিভিন্ন বিষয়ে তার মৌলিক গবেষণা বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে।

10. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ব্যর্থ হয়েছিল কেন?

1906 খ্রিস্টাব্দের 11 মার্চ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে কলকাতায় 92 জন সদস্য নিয়ে গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ। বিপুল আশা-আকাক্ষার মধ্য দিয়ে জাতীয় শিক্ষা পরিষদগঠিত হলেও নানা কারণে তা ব্যর্থ হয়।

ব্যার্থতার কারণঃ-

a. এই প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত ডিগ্রি গুরুত্বহীন হওয়ায় অভিভাবকেরা সরকারের শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হয়।

b. স্বল্প বেতনের জন্য অনেক শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন।

c. অর্থ সংকট, সরকারি বাধা, কলকাতাকেন্দ্রিকতা, চরমপন্থী কর্তৃক এই পরিষদকে স্বীকৃতি দান না করা ইত্যাদি এর পতন ত্বরান্বিত করে।

11. কার্লাইল সার্কুলার কি?

বাংলা সরকারের চিফ সেক্রেটারি ‘কার্লাইল বয়কট’ ও ‘স্বদেশি’ আন্দোলনে ছাত্রদের সক্রিয় ভূমিকা দেখে আতঙ্কিত হন। ছাত্রদের দমনের জন্য ও স্বদেশি আন্দোলন থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখারজন্য তিনি 1905 খ্রিস্টাব্দের 10 অক্টোবর একটি সার্কুলার জারি করেন। এটি ‘কার্লাইল সার্কুলার’ নামে পরিচিত। ছাত্রদের রাজনৈতিক সভা সমিতি ও পিকেটিং থেকে নিবৃত্ত করাই ছিল এর উদ্দেশ্য।

12. হিকির বেঙ্গল গেজেট কি?

বাংলার প্রথম ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিল জেমস অগাস্টাস হিকি বেঙ্গল গেজেট প্রথম প্রকাশ্য 1 জানুয়ারি 1780 সালে।

প্রকৃতিঃ- এই সংবাদপত্রে-

a. ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে সংবাদ ও বিজ্ঞাপন থাকত।

b. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্মচারী থেকে লাটসাহেবের কাজের সমালোচনা ও কীর্তিকলাপ প্রকাশ হত।

            ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে বিতরকের ফলে 1782 সালে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়।

13. কিভাবে বাংলার ছাপার অক্ষর ব্যবহৃত হয়?

1778 খ্রিস্টাব্দে ব্রাসি হ্যালহেড ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারী বা ইংরেজদের বাংলা শিক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষায় ‘A Grammar of the Bengal Language' নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠার চারভাগের একভাগ অংশে উদাহরণরুপে বাংলা হরফ ব্যবহার করা হয়। এইভাবে প্রথম বাংলা মুদ্রণ বা ছাপার কাজ শুরু হয়।

14. শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা?

হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও শিক্ষাবিস্তারের কাজ শুরু করে। শ্রীরামপুর এয়ী উইলিয়ম কেরি, ফ্রাসোয়া মার্শম্যান ও উইলিয়ম ওয়ার্ড— এই তিনজন পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। এঁদের একত্রে বলা হয় শ্রীরামপুর ত্রয়ী।

অবদান : এঁরা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা, “দিগদর্শন’ ও ‘সমাচার দর্পণ পত্রিকা প্রকাশ, 26টি আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল অনুবাদ এবং বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

15. সংস্কৃত যন্ত্র বিখ্যাত কেন?

1847 খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলকাতার 62 নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে যৌথভাবে ‘সংস্কৃত যন্ত্র’ নামক ছাপাখানাটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগর এই ছাপাখানার একক মালিকানা স্বত্ব লাভ করেন। উনিশ শতকে ছাপাখানার ইতিহাসে বিখ্যাত এই ছাপাখানা থেকে বিদ্যাসাগরের রচিত বিভিন্ন গ্রন্থও প্রকাশিত হয়।

16. ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল?

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স বা সংক্ষেপে IACS হল কলকাতায় অবস্থিত একটি বিজ্ঞান গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 1876 খ্রিস্টাব্দে ড. মহেন্দ্রলাল সরকার এটি প্রতিষ্ঠা করেন। IACS প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল—

a. বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলা।

b. বৈজ্ঞানিক গবেষণার মান উন্নত করা।

c. পাশ্চাত্য দেশের বিজ্ঞানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা।

d. পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে আলোচনা করা প্রভৃতি।

17. মহেন্দ্রলাল সরকার বিখ্যাত কেন?

উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালিদের অন্যতম ছিলেন ডঃ মহেন্দ্রলাল সরকার।

চিকিৎসকঃ- তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করা এক বিশিষ্ট চিকিৎসক (MD) ছিলেন।

প্রতিষ্ঠাতাঃ- তিনি বিজ্ঞানচর্চার জন্য ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন 1876 খ্রিস্টাব্দে। এই বিশিষ্টব্যক্তিত্ব বাঙালির বিজ্ঞানচর্চাকে উন্নত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে ভারতীয় বিজ্ঞানচর্চার ‘জনক’ বলা হয়।

18. পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত কেন?

বাংলা মুদ্রাক্ষর তৈরির ক্ষেত্রে উইলকিনসের সহযােগী ছিলেন হুগলি নিবাসী শিল্পী পানন কর্মকার। তার তৈরি মুদ্রাক্ষর হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীকালে 1793 খ্রিস্টাব্দে ‘কর্নওয়ালিশ কোড’-এর বাংলা সংস্করণেও তার তৈরি উন্নত বাংলা মুদ্রাক্ষর ব্যবহার করা হয়। তাঁর প্রচেষ্টাতেই বাংলা হরফ নির্মাণ একটি স্থায়ী শিল্পে পরিণত হয়।

19. বসু বিজ্ঞান মন্দির-এ কোন্ কোন্ বিষয়ে গবেষণা হত?

বসু বিজ্ঞান মন্দিরে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণা হত।

20. কাকে কেন বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়?

‘বাংলা চলনশীল’ বা ‘মুভেবল বাংলা’ হরফ নির্মাতা প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত চার্লস উইলকিনসকে বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়।

কারণঃ-১৪৫৫ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির গুটেনবার্গ ‘চলনশীল’ বা ‘মুভেবল’ মুদ্রাক্ষর তৈরি করে ইউরোপের মুদ্রণ ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। অনুরূপভাবে, চার্লস উইলকিনসও ভারতে চলনশীল বাংলা হরফ বা মুদ্রাক্ষর তৈরি করে বাংলা ভাষার বিকাশে অনবদ্য অবদান রাখেন। তাই তাকে বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়।

21. বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এর পাঠক্রম কি ছিল?

বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের পাঠ্যক্রম ছিল কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রিক। এখানে তিন বছরের ইন্টারমিডিয়েট ও চার বছরের সেকেন্ডারি বা মাধ্যমিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়। সমকালীন শিক্ষক বিনয়কুমার সরকার উপহাস করে এই প্রতিষ্ঠানকে ‘মিস্তিরি তৈরির কারখানা’ বলে অভিহিত করেন।

22. বাংলা ছাপাখানা উদ্ভবের পেছনে কারণ কি ছিল?

ছাপাখানার প্রসারের কারণঃ-

A. ক্রমবর্ধমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানঃ- বাংলাদেশে প্রচলিত দেশজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর পাঠ্যবই ছাপার জন্য ছাপাখানা দরকার হয়।

মুনাফাঃ-ছাপাখানা ব্যাবসাতে প্রচুর মুনাফা হয়। তাই নতুন নতুন উদ্যোগীরা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। এছাড়াও বাংলা ভাষায় প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনার প্রয়োজনে এবং শাসক ও শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব ঘটে।

23. গোলদিঘির গোলামখানা কাকে কেন বলা হয়?

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে ভারতে ঔপনিবেশিক শিক্ষা প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল সস্তার কেরানি তৈরি করা। কারণ স্বল্প বেতনের কেরানির চাকরি করার জন্য বিদেশ থেকে লোক পাওয়া সম্ভব ছিল না। এর ফলস্বরূপ এই বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজ-প্রসাদ-গর্বিত কর্তাভজা ভদ্রলোক তৈরির কারখানায় পরিনত হয়েছিল, দাস্যভক্তি ছিল এদের মধ্যে লক্ষনীয়। এই কারণে অনেকে এই সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কে ব্যঙ্গ করে ‘গোলদীঘির গোলামখানা’ বলতেন।

24. ভারতের ছাপাখানার স্থাপনের প্রভাব কি রকম ছিল?

ভারতের ছাপাখানার স্থাপনের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী।ছাপাখানা বিস্তারের ফলে একদিকে যেমন ছাপা বই পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয় এবং এর মাধ্যমে পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞান, গণতন্ত্র, উদারনীতিবাদ,যুক্তিবাদ ছড়িয়ে পড়ে, দেশ বিদেশের খবরা খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে মানুষ জানতে পেরেছিল;তেমনি অন্যদিকে ভারতীয়রা নিজেদের দুরবস্থা, সামাজিক কুসংস্কার সম্বন্ধে সম্যক সচেতনা হয়ে পড়েছিল। এছাড়াও জনমত গঠন, সাহিত্য রীতি এবং শ্রেনী চরিত্র গঠন করার ক্ষেত্রে ছাপাখানার ব্যাপক অবদান রয়েছে।

25. বাংলা মুদ্রণ শিল্পের ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা লেখ?

প্রশাসনিক প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সিভিলিয়ানদের ইংরেজির পাশাপাশি দেশীয় ভাষাতেও শিক্ষাদান করা হত। তাই এরকম শিক্ষাদানের জন্য বাংলায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজনীয়তা থেকেই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানা সহ সংস্কৃত প্রেস, হিন্দুস্থানি প্রেস-এ ছাপার বরাত (Order) দিত। এভাবেই বাংলা মুদ্রণ শিল্পে গতির সৃষ্টি হয়।

26. ছাপাখানা শিক্ষা বিস্তারে কি ভূমিকা নিয়েছিল?

বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভবের আগে জ্ঞান বা শিক্ষাজগৎ ছিল হাতে লেখা পুথি বা মুখস্থবিদ্যার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ছাপা বইয়ের ফলে মুষ্টিমেয় ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ জ্ঞান অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, শ্রীরামপুর মিশন, স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে বাংলায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও পরিবেশনার কাজও শুরু হয়।

27. প্রকাশনা জগতে বর্ণপরিচয়ের গুরুত্ব কি?

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত বর্ণপরিচয় ছিল একটি শিশুপাঠ্যপুস্তক। এখানে বাংলা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ নির্দিষ্ট করা হয়। এই বইয়ে ব্যবহৃত বাংলা হরফ প্রকাশনা জগতে একটি আদর্শ হরফ ব্যবস্থার প্রবর্তন করে।

28. ছাপাখানার দুটি ফলাফল লেখ?

a. বাংলায় ছাপাখানা প্রবর্তনের ফলে বাংলা ভাষা ও জ্ঞানের এবং শিক্ষার বিস্তার ঘটে।

b. ছাপাখানা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে কলকাতা-কেন্দ্রিক নতুন পেশার উদ্ভব ঘটে।

c. বাংলার সমাজ ও ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে বিভিন্নধর্মী পত্রপত্রিকা ও সাহিত্যের উদ্ভব ঘটে।

29. রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা ভাবনা কি ছিল?

অথবা শিশু শিক্ষা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কি বলেছেন?

রবীন্দ্রনাথের মতে, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হবে শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক বুদ্ধি ও কল্পনার বিকাশের সুযোগ দান করা। তিনি প্রাচীন ভারতের আশ্রম ও গুরুকুল প্রথাকে আধুনিক জীবনে আনতে চেয়েছিলেন। তিনি মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং কাজেও তা করে দেখিয়েছেন। তিনি মনে করতেন বিজ্ঞান শুধু পরীক্ষাগারের চার দেওয়ালের মধ্যে নেই, তার স্থান ক্লাস ঘরের বাইরে, হাটে-মাঠে-মাটিতে। রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন পল্লিচর্চা ও পল্লিসংগঠন ছাড়া ভারতের শিক্ষা অসম্পূর্ণ।

30. রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর শিক্ষানীতির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর?

রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর শিক্ষানীতির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল-

a. প্রাচ্যের আদর্শ ও বানীকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্ব্য সাধন করা।

b. প্রকৃতি ও মানুষের সান্নিধ্যে শিক্ষাদান।

c. শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করা।

31. স্কুল বুক সোসাইটি কে কবে কেন প্রতিষ্ঠা করেন?

     1817 খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ার কলকাতায় স্কুলবুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

উদ্দেশ্যঃ-

a. ভালো পাঠ্যবই প্রকাশ করাঃ-ডেভিড হেয়ার ইংরেজি ও ভারতীয় ভাষায় ভালো পাঠ্যবই রচনা করার জন্য এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

b. শিক্ষার প্রসার ঘটানোঃ-তিনি অল্প দামে বই বিক্রি করে, আবার কখনও বিনা মুল্যে বিতরণ করে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে চেয়েছিলেন।

32. ভারতের ছাপাখানার ইতিহাসে হিকির অবদান কি?

বাংলার ছাপাখানার ইতিহাসে জেমস অগাস্টাস হিকি একজন উদ্যোগী ও অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

অবদানঃ-

প্রথম উদ্যোগী:- হিকির উদ্যোগেই কলকাতায় প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় 1777 খ্রিস্টাব্দে।

প্রথম প্রকাশক:- হিকি ছিলেন বাংলাদেশ তথা ভারতের প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশক। তিনি সাপ্তাহিক ইংরেজি পত্রিকা ‘বেঙ্গল গেজেট’ প্রকাশনা করতেন।

প্রথম সাংবাদিক:- পেশাদার সাংবাদিক না হলেও তিনিই বাংলা তথা ভারতের সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক ছিলেন।


           👉 ৪ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর [ Four marks]


1. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা

অথবা টীকা লেখ :: জাতীয় শিক্ষা পরিষদ

ভূমিকা:: বঙ্গভঙ্গবিরোধী স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনে বিদেশি শিক্ষাকেও বয়কট করার ডাক দেওয়া হয় । এর পাশাপাশি স্বদেশি শিক্ষার প্রসার ঘটানো হয়। শিক্ষা বিষয়ে স্বদেশি আন্দোলনের ফলে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় আদর্শে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।

পটভূমি: স্বদেশি বয়কট আন্দোলনে ছাত্ররা দলে দলে যোগদান করে। আন্দোলন থেকে ছাত্রদের দূরে রাখার জন্য ব্রিটিশ সরকার তিনটি সার্কুলার জারি করে।এগুলি হল— কার্লাইল সার্কুলার(1905 খ্রিষ্টাব্দের অক্টবর 10), লিয়ন সার্কুলার (1905 খ্রিষ্টাব্দের অক্টবর 16),পেডলার সার্কুলার (1905 খ্রিষ্টাব্দের অক্টবর 21),  

অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি : এইসব সার্কুলারগুলির বিরুদ্ধে শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু 1905 খ্রিস্টাব্দের 4 নভেম্বর কলকাতায় অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল— স্বদেশি পণ্য বিক্রি করা, বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠন :

i) 1905 খ্রিস্টাব্দের 5 নভেম্বর ডন সোসাইটির উদ্যোগে জাতীয় শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য একটি বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

ii) 1905 খ্রিস্টাব্দে 8 নভেম্বর রংপুরে সর্বপ্রথম জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

iii) 1906 খ্রিস্টাব্দের 11 মার্চ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় 92 জন সদস্য নিয়ে কলকাতায় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (National Council of Education) গঠিত হয়।

এই পরিষদের অধীনে 1906 খ্রিস্টাব্দের 14 আগস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কারিগরি শিক্ষার জন্য 1906 খ্রিস্টাব্দের 25 জুলাই কলকাতায় বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়।

জাতীয় শিক্ষার বিস্তার: বাংলা ও বাংলার বাইরে জাতীয় শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছিল। 1908 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বাংলায় 25 টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও 300 টির বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। বাংলার বাইরে বোম্বাই, মাদ্রাজ, যুক্তপ্রদেশ, পাঞ্জাব, বেরার, মসুলিপত্তম, অন্ত্র প্রভৃতি জায়গায় জাতীয় শিক্ষার প্রসার ঘটে। জাতীয় শিক্ষার জনপ্রিয়তা বজায় থাকে 1910 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।

মূল্যায়ন : 1910 খ্রিস্টাব্দের পর বিভিন্ন কারনে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে।তবে যাইহোক না কেন জাতীয় শিক্ষা পরিষদই প্রথম জাতীয় স্তরের শিক্ষা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল।

2. ছাপাখানা স্থাপন ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে শ্রীরামপুর মিশনেরঅবদান লেখ।

ভূমিকা:- বাংলাদেশে শ্রীরামপুর মিশনারিদের বহু কৃতিত্বের নিদর্শন আছে। এসব কৃতিত্বের অন্যতম হল ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা ও প্রকাশনা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশনার মাধ্যমে শ্রীরামপুর মিশন শিক্ষাবিস্তার ও সমাজ চেতনা সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রেখেছিল।

ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা:- জোসুয়া মার্শম্যান, উইলিয়ম ওয়ার্ড ও উইলিয়ম কেরি শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা করেন 1800 খ্রিস্টাব্দের 10 জানুয়ারি। এদের মধ্যে উইলিয়ম কেরি একটি কাঠের পুরাতন ছাপাখানা কিনে ওই একই বছরে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীরামপুর মিশন। পরে লোহার ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। 1820 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মিশনের ছাপাখানার সংখ্যা দাঁড়ায় 18টি।

মুদ্রণ:- শ্রীরামপুর মিশন ছাপাখানায় প্রথমে ইংরেজি ভাষায় কাঠের হরফের ব্লক তৈরি করে ছাপা হত। পরে ধাতুর ইংরেজি ও বাংলা হরফ তৈরি করা হয়। এ সময়ে হরফ তৈরিতে পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত ছিলেন। কেরি তাঁকে মিশনে নিয়োগ করেন। মিশনের ছাপাখানার কম্পজিটার ছিলেন গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।

প্রকাশনা: শ্রীরামপুর মিশন বহু গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা প্রকাশ করে। তারা প্রথমে বাইবেল প্রকাশ করে। ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত বাইবেল ছাড়াও 26টি আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল ছাপা হয়। 36টি বাংলা হরফে ও 1টি সংস্কৃত হরফে লেখা গ্রন্থ এবং এগুলির 12টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এসময় গড়ে ওঠা স্কুলকলেজের বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যবই ছাপা ও প্রকাশের কাজও এখানে করা হত। দিগদর্শন’ (এপ্রিল, 1818 খ্রিস্টাব্দ), সমাচার দর্পণ’ (মে, 1818 খ্রিস্টাব্দ), ‘ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এইভাবে বিদেশি উদ্যোগে বাংলা ও ইংরেজি হরফে বই, পত্রপত্রিকা ছাপা ও প্রকাশিত হতে থাকে। এইভাবে শ্রীরামপুর মিশনারিরা ছাপাখানা স্থাপন ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখেন।

 3.  বাংলায় আধুনিক ছাপাখানা মুদ্রণ শিল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা বাংলায় ছাপাখানা বিস্তারের ইতিহাস আলোচনা কর।

ভূমিকা :: উনিশ শতকের বাংলায় যে জাগরণ বা নবজাগরণ ঘটেছিল তার কেন্দ্র ছিল মুদ্রণ যন্ত্র বা ছাপাখানা। এই ছাপাখানায় ছিল সকল বিপ্লবের মূল সুর। এই ছাপাখানা থেকেই হাজার হাজার বই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ত আর এই ছাপা বই বাঙালির চিন্তা ও চেতনায় বিপ্লব সংঘটিত করত। যাইহোক জার্মানির জোহান্স গুটেনবার্গ 1454 খ্রিস্টাব্দে আধুনিক মুদ্রণ যন্ত্র তথা ছাপাখানা আবিষ্কার করলে এক শতাব্দীর মধ্যেই সমগ্র ইউরোপে মুদ্রণ শিল্পের অভাবনীয় প্রসার ঘটে। ভারতে 1556 খ্রিস্টাব্দে গোয়ায় পর্তুগীজদের হাত ধরে ছাপাখানার আবির্ভাব হয় এবং বাংলায় পৌছায় 1770 এর দশকে।

বাংলায় ছাপাখানার ইতিহাসঃ-    

 গ্রাহাম শ নামক একজন ব্যক্তির বিবরণ থেকে জানা যায় যে 1770-1800 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে প্রায় 40টি ছাপাখানা ছিল। আর এই ছাপাখানা গুলির বেশিরভাগই ছিল সংবাদপত্র প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত। গ্রাহামের বিবরণ থেকে এই সময় চারজন মুদ্রাকরের নাম পাওয়া যায় --

i)হিকির প্রেস :- জেমস অগাস্টাস হিকি কলকাতায় প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন 1777 খ্রিস্টাব্দে। প্রথমে তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সামরিক বিল ও বাট্টার কাগজ ছাপাতেন। এরপর হিকি 1780 খ্রীষ্টাব্দে সর্বপ্রথম ‘বেঙ্গল গেজেট’ নামে একটি সংবাদপত্র এখান থেকেই প্রকাশ করেন।

ii) জাকারিয়ার প্রেস:- জন জাকারিয়া নামক এক খ্রিস্টান মিশনারী 1789 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রেসে ধর্মগ্রন্থ, বর্ষপঞ্জি আদালতে ব্যবহৃত কাগজপত্র ইত্যাদি ছাপা হত।

iii) বার্নাড মেসেনিকঃ- বার্নাড মেসেনিক একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। 1780 খ্রীষ্টাব্দে তিনি পিটার রিড নামে আর এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কলকাতায় একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন আর এখান থেকেই ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ইন্ডিয়া গেজেট’ প্রকাশিত হতো।

iv) চার্লস উইলকিন্স:-চার্লস উইলকিনস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন কেরানি ছিলেন।1778 খ্রীষ্টাব্দে গভর্নর জেনারেল লর্ড হেস্টিংস এর নির্দেশে তিনি ‘হ্যালহেডের ব্যাকরন (A grammar of the Bengali language) ছাপানোর জন্য চুঁচুড়ায় একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন।পরে এই ছাপাখানাটি সরকার অধিগ্রহণ করেন।

v) শ্রীরামপুর মিশন প্রেস:- শ্রীরামপুর ত্রয়ী এর অন্যতম উইলিয়াম কেরি( উইলিয়াম কেরি,জোসুয়া মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড) একটি কাঠের ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন 1800 খ্রিস্টাব্দে। এখান থেকে বহু বই, দিকদর্শন, সমাচার দর্পণ, ও ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়ার মতো অনেক সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। একটা পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে, 1840 এর দশক পর্যন্ত শুধুমাত্র কলকাতা শহরেই কমপক্ষে 50টি ছাপাখানা ছিল এবং পুরো শতক জুড়ে তার সংখ্যা দাঁড়ায় হাজারেরো বেশি।

            পরিশেষে বলা যায় যে, এই ভাবেই ইউরোয়ীয়দের উদ্যোগে বাংলায় একাধিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্রমে ছাপাখানার শিল্পের শ্রীবৃদ্ধি ঘটতে থাকে। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য অনেক ছাপাখানা গড়ে ওঠে পরে এ শিল্পের বিকাশে বাঙালিরাও এগিয়ে আছে।

 4.বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকা আলোচনা কর।

ভূমিকাঃ-উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বাংলা তথা সমগ্র ভারতে প্রকাশনা জগতের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় নাম। তিনি বাংলায় ‘হাফটোন’ পদ্ধতি, ‘রঙিন ব্লক’-এর সূচনা করেছিলেন। তিনি 1895 খ্রিস্টাব্দে তার নিজস্ব মুদ্রণ ও প্রকাশনা সংস্থা ‘ইউ. এন রায় অ্যান্ড সন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে তার পুত্র সুকুমার রায়ের প্রচেষ্টায় এই  সংস্থার খ্যাতি বৃদ্ধি পায়।

ইউ. রায় অ্যান্ড সন্স-এর প্রতিষ্ঠা : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিদেশ থেকে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র এনে 1895 খ্রিস্টাব্দে ’ইউ. এন রায় অ্যান্ড সন্স’ নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে এটি ছিল কলকাতার 38/1 শিবনারায়ণ দাস লেনে। পরবর্তীকালে এর ঠিকানার পরিবর্তন ঘটেছিল।

হাফটোন ব্লকের ব্যবহার : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছাপার বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। তিনি ছাপার কাজে হাফটোন ব্লক তৈরি ও প্রয়োগের উদ্ভাবক ছিলেন। এর ফলে মুদ্রণ শিল্পে অভূতপূর্ব উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।তিনি তার ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’ থেকে প্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ ও ভিতরের পাতায় কীভাবে উন্নত ছবির ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। এক্ষেত্রে তিনি স্ক্রিন অ্যাডজাস্টার যন্ত্র, ডায়াফর্ম সিস্টেম প্রভৃতিব্যবহার করে সে যুগেও রংবেরঙের ছবি ছাপার ব্যবস্থা করেন।

সুকুমার রায়ের প্রচেষ্টা : ছাপার বিষয়ে আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তার সুযোগ্য পুত্র সুকুমার রায়কে লন্ডনে পাঠিয়েছিলেন। সুকুমার রায় পিতার উদ্ভাবনী দক্ষতার সঙ্গে তাঁর নিজস্বতা দিয়ে ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’-কে একটি বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করেছিলেন

প্রকাশনা : ’ইউ. এন রায় অ্যান্ড সন্স’ থেকে প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— ‘টুনটুনির বই’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন‘ছেলেদের মহাভারত’ ইত্যাদি। এই সংস্থার অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান হল সন্দেশ পত্রিকার প্রকাশ

উপসংহার: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এবং সুকুমার রায় কেবলমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য ’ইউ. এন রায় অ্যান্ড সন্স’-এর প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেননি। তারা এখান থেকে নিজেদের লেখা গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ছাপার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন। তাই ছাপাখানার জগতে তাদের এই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

 6.বাংলায় মুদ্রণের ব্যবসায়িক উদ্যোগ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।

ভূমিকাঃ- ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে ব্যাবসায়িক উদ্যোগে বেশকিছু ছাপাখানা স্থাপিত হয়েছিল। এগুলিতে মূলত পাঠ্যপুস্তক ছাপানো এবং পাঠ্যবহির্ভূত অন্যান্য পুস্তক ছাপানোর কাজ চলত।  ব্যাবসায়িক উদ্যোগ ও বাংলাদেশে উনবিংশ শতাব্দীতে যে সমস্ত ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা ছিল দুই ধরনের—ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং প্রতিষ্ঠানগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ছাপাখানা। হিকির উদ্যোগ ও কলকাতায় জেমস অগাস্টাস হিকি বসায়িক ভিত্তিতে ছাপাখানার কাজ শুরু করেন। এখানে মলিটারি বিল, সামরিক বাহিনীর বিধিবিধান, বিভিন্ন ভাতার ফর্মসহ ‘বেঙ্গল গেজেট’ ছাপা হত।

উইলকিনসের উদ্যোগঃ- 1781 খ্রিস্টাব্দে উইলকিনস কলকাতায় ব্যাবসায়িক উদ্যোগে ‘অনারেবল কোম্পানিজ প্রেস’ অতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল ব্যাবসায়িক উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি উল্লেখযোগ্য ছাপাখানা

গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের উদ্যোগ :  প্রথম বাঙালি প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা ছিলেন গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য। ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল' গ্রন্থটিকে তিনি চিত্রসহ প্রকাশ করেছিলেন। বিদ্যাসাগরের অবদান ও বিদ্যাসাগর ব্যাবসায়িক উদ্যোগে সংস্কৃত প্রেস স্থাপন করেছিলেন। এখান থেকে 1856 খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে প্রায় 50 হাজার কপি ‘বর্ণপরিচয়’ ছাপা হয়। ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগের জন্য তাকে ‘বিদ্যাবণিক’ বলা হয়। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরির উদ্যোগ ও বাংলাদেশে ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরির নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। তার প্রতিষ্ঠিত ইউ.এন রায় অ্যান্ড সনস’ নামক ছাপাখানাটি আধুনিক বাংলা ছাপাখানার পথপ্রদর্শক ছিল। অন্যান্য ও শরকুমার লাহিড়ি, গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এবং এস. কে. লাহিড়ি অ্যান্ড কোম্পানি, বেঙ্গল মেডিকেল লাইব্রেরি, ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস প্রভৃতি ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল

উপসংহারঃ- ব্যাবসায়িক উদ্যোগী হিসেবে এক সময় বাঙালিরা ছাপাখানার বিস্তারে এই সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।

 7.বাংলায় কারিগরি শিল্পের বিকাশে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট বা BTI এর ভূমিকা আলোচনা করো।

অথবা টীকা লেখ বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট বা   B. T. I

ভূমিকা :: স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনের পটভুমিকায় 1906 সালে দেশীয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয়শিক্ষা পরিষদ, যার উদ্দেশ্য ছিল বিদেশি নিয়ন্ত্রনমুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করা। এই সময় জাতীয় শিক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোন কোন শিক্ষাকে গুরুত্ব দেবে সে বিষয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। গুরুদাস ব্যানার্জি, সতীশ মুখার্জী, হীরেন দত্ত প্রমুখ যারা মনে করত জাতীয় শিক্ষা পরিষদ দেশের সব শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করবে অপরদিকে তারকনাথ পালিত নীলরতন সরকার মনিন্দ্র চন্দ্র নন্দী প্রমুখ যারা বিশ্বাস করতেন যে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের মূল লক্ষ্য হবে কারিগরি শিক্ষার বিস্তার। প্রথম দলের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ ও স্কুল এবং দ্বিতীয় দল 1906 খ্রীষ্টাব্দের 25 শে জুলাই তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট বা B.T.I 

পঠন পাঠনঃ- বিটিআই-এ মূলত দুই ধরনের পাঠ্যক্রম চালু ছি

i) তিন বছরের অন্তর্বর্তী পাঠ্যক্রম

ii) চার বছরের মাধ্যমিক পাঠ্যক্রম।

অন্তর্বর্তী পাঠ্যক্রমের তিনটি বিষয় ছিল ক)যন্ত্র বিজ্ঞান ও বৈদ্যুতিক যন্ত্র বিজ্ঞান খ)ফলিত রসায়ন এবং গ)ভুবিদ্যা। এই পাঠ্যক্রমের প্রথমবর্ষে পদার্থবিদ্যা, গণিত, ইংরেজি ও চিত্রাঙ্কন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হতো। বেশ কিছু নামকরা শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যেমন প্রমথনাথ বসু, শরৎ দত্ত, প্রফুল্ল মিত্র প্রমুখ ব্যক্তি

অগ্রগতি ও প্রসারঃ-সে সময় কারিগরি শিক্ষার যে কর্মবর্ধমান চাহিদা তৈরি হয়েছিল তা পূরণ করতে পেরেছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। বিটিআই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দুই বছর পরে অর্থাৎ 1908 সালে এর ছাত্র সংখ্যা হয় 128  জন এবং 1916 সালে 150 জন, 1920 সালে 240 জন এবং 1928 সালে তা আরও বেড়ে গিয়ে মোট ছাত্র সংখ্যা দাড়ায় 520 জন। যার ফলে এই প্রতিষ্ঠানের প্রসারের প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়

1925 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠান থেকে গড়ে প্রায় 100 জন সুযোগ্য ইঞ্জিনিয়ারিং তৈরি হয়।যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কারিগরি শিক্ষার বিকাশে নিয়োজিত হয়। 1928 খ্রিস্টাব্দে বিটিআই এর নতুন নাম হয় কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি এবং ভারত স্বাধীন হওয়ার পর 1955 খ্রিস্টাব্দে এটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিতি লাভ করে

মূল্যায়নঃ- এইভাবে বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা ও বিজ্ঞান চেতনার প্রসার ঘটে, এক্ষেত্রে উদ্যোগ ছিল সম্পূর্ণরূপে দেশীয় 

8.বসু বিজ্ঞান মন্দির সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর

ভূমিকাঃ- 1917 খ্রিস্টাব্দে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রধানত, জীব এবং জড় বস্তুগুলির বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করা ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এটি ‘বোস ইন্সটিটিউট’ নামেও পরিচিত ছিল। 

প্রতিষ্ঠাঃ- 1915 খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্র বসু প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে 1917 খ্রিস্টাব্দে বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বিজ্ঞানের নির্দিষ্ট শাখায় মৌলিক গবেষণা করার জন্য তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন। 

পাঠ্যবিষয়ঃ- এখানে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ছাড়াও মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশবিদ্যা, অ্যানিম্যাল ফিজিয়োলজি, বায়োইনফরমেটিক্স প্রভৃতি বিষয়গুলি। নিয়ে গবেষণার সুযোগ আছে। এমনকি এখানে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা এবং গবেষণা করা যায়। অবদান ও বসুবিজ্ঞান মন্দির বিভিন্ন বিষয়ে তার অবদান রেখেছে। যেমন—কলেরার টিকা আবিষ্কারে কিংবা উদ্ভিদের যে প্রাণ আছে তার প্রমাণে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তা ছাড়া আধুনিক মলিকিউলার বায়োলজির সূচনা হয় এখানে। ‘আয়োনোসিটাল ফসফেট’ চক্রের আবিষ্কার এখানেই ঘটেছিল। জগদীশচন্দ্র বসুর বহু পাণ্ডুলিপি ও মিউজিয়াম এখানে রয়েছে। এখানকার কৃতী গবেষকেরা এখান থেকে এস. এস. ভাটনগর পুরস্কার, হোমি জাহাঙ্গির ভারা ফেলোশিপ প্রভৃতি পেয়ে থাকেন। আর্থিক সাহায্য ও প্রাথমিক পর্বে জগদীশচন্দ্র বসু তার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এই প্রতিষ্ঠানকে 30 কোটি টাকার তহবিল দান করা হয়।

উপসংহার:- বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণা ও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বসুবিজ্ঞান মন্দির উল্লেখযোগ্য ছাপ রেখেছে। বিজ্ঞানের গবেষণা ও প্রসারে তাই এর অবদানকে আমাদের ভুললে চলবে না।

 9. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তার শান্তিনিকেতন ভাবনা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

ভুমিকাঃ-বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে নিজের শিক্ষাচিন্তার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের কাছ থেকে 20 বিঘা জমি নিয়ে 1863 খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে রবীন্দ্রনাথ 1901 খ্রিস্টাব্দের 22 ডিসেম্বর পাঁচজন ছাত্র নিয়ে ব্ৰত্মচর্যাশ্রম’নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ধাপে ধাপে এই শান্তিনিকেতনেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠা করেন।

রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন ভাবনা :-

i)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নিজস্ব শিক্ষাচিন্তার ভিত্তিতে শান্তিনিকেতনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি চেয়েছিলেন প্রকৃতির কাছাকাছি আদর্শ পরিবেশের মধ্যে শিশুদের বড়ো করে তুলতে হবে।

ii)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন ভারতের আশ্রমিক শিক্ষার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের শান্তিনিকেতনে রেখে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

iii) রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে গুরু ও শিষ্যের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। তিনি বলতেন, শিক্ষক শ্রদ্ধার সঙ্গে জ্ঞান বিতরণ করবেন আর শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধার সঙ্গে।তা আহরণ করবে।

iv)রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে শিক্ষার্থীদের সৃজনমূলক কাজের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। এখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের উৎসব পালন করারও ব্যবস্থা করেন। তিনি বলতেন, এসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে।

এই বিদ্যালয়ে গতানুগতিক সময়তালিকার বিশেষ গুরুত্ব ছিল না। শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুসারে তা নির্ধারণ করা হত।

উপসংহার:-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই শান্তিনিকেতনে 1921 খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন ভাবনা শুধু বাংলা বা ভারতে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে একদিকচিহ্ন হয়ে আছে। দেশ-বিদেশের বহু ছাত্র ও শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

 10.রবীন্দ্রনাথের কিভাবে ঔপনিবেশিক শিক্ষা নীতির সমালোচনা করেছিলেন?

অথবা রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থার স্বরূপ কি রকম ছিল?

ভূমিকাঃ- ঊনবিংশ শতাব্দীতে ঔপনিবেশিক আমলে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়। এই শিক্ষা ব্যবস্থা ভারতের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি একটি বৃহৎ অংশকে বিমুখ করে এবং এই শিক্ষা ভারতীয়দের সর্বাঙ্গীণ বিকাশেও ব্যর্থ হয়। বিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকেই ভারতে ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিণতিতে জাতীয় নেতৃত্ব ও ভারতীয় শিক্ষাবিদরা পাশ্চাত্য শিক্ষার বদলে জাতীয় শিক্ষার বিকাশ ও বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। রবীন্দনাথ ঠাকুর ছিলেন এদের মধ্যে অন্যতম। তিনি 1893 খ্রিস্টাব্দে ‘শিক্ষার হেরফের’ প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে ঔপনিনেশিক শিক্ষা ব্যাবস্থার সমালোচনা করে প্রকৃত শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত তা তুলে ধরেছেন।

প্রাণের ছোঁয়ার অভাবঃ- ঔপনিবেশিক শিক্ষাপ্রণালীর মাধ্যমে পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চার সঙ্গে এদেশের ছাত্রছাত্রীদের পরিচয় ঘটলেও, সেই যোগাযোগে প্রাণের ছোঁয়া ছিল না। তা ছাড়া, ওই বিজ্ঞানশিক্ষার সঙ্গে ভারতীয় আধ্যাত্মিকতার এবং দর্শনের কোনো যোগাযোগ ছিল না।

নান্দনিকতার অভাবঃ- ভাষাশিক্ষার ক্ষেত্রে ইংরেজদের যতটা প্রশাসনিক কাজ করার উপযুক্ত কর্মচারী তৈরি করার আগ্রহ ছিল, সাহিত্য বা ভাষাশিক্ষার সাহায্যে একটা নান্দনিক মন গডে তোলার আগ্রহ এককণাও ছিল না ‘বিদেশি ভাষায় ব্যাকরণ’ এবং ‘মুখস্থবিদ্যার শিলাবৃষ্টি বর্ষণ’ ঔপনিবেশিক ভাষাশিক্ষাকে ব্যর্থ করে দেয়।

দেশীয় ভাষার প্রতি অবমাননা :- শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজরা নিজেদের প্রয়োজনে ইংরেজিকেই বেছেছিলেন। শাসকের ভাষায়, শাসকের দৃষ্টিতে ভারতে ইতিহাস থেকে বিজ্ঞান সবকিছু শেখানো হত বলে দেশীয় ভাষা-সংস্কৃতির চর্চা কমে যাচ্ছিল। ফলে, শিক্ষা সর্বজনীন হয়ে মুষ্টিমেয় মানুষের জীবন-জীবিকার উপকরণ হয়ে উঠেছিল।

উপসংহারঃ-রবীন্দনাথ শুধু ঔপনিবেশিক শিক্ষার সমালোচনায় করেননি বিকল্প শিক্ষার পথও বলেদিয়েছেন। তার মতে, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হবে শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক বুদ্ধি ও কল্পনার বিকাশের সুযোগ দান করা। তিনি প্রাচীন ভারতের আশ্রম ও গুরুকুল প্রথাকে আধুনিক জীবনে আনতে চেয়েছিলেন। তিনি মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং কাজেও তা করে দেখিয়েছেন। তিনি মনে করতেন বিজ্ঞান শুধু পরীক্ষাগারের চার দেওয়ালের মধ্যে নেই, তার স্থান ক্লাস ঘরের বাইরে, হাটে-মাঠে-মাটিতে। রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন পল্লিচর্চা ও পল্লিসংগঠন ছাড়া ভারতের শিক্ষা অসম্পূর্ণ।


          👉৮ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর [ Eight marks]


  1.বিজ্ঞান চর্চায় কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ ও বসু বিজ্ঞান মন্দিরের অবদান আলোচনা কর।

কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ : 

ভূমিকা:-কলকাতার অন্যতম প্রাচীন বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হল কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় 1914 খ্রিস্টাব্দে ইউনিভারসিটি কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ প্রতিষ্ঠা করেন। এটি কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ’ নামে পরিচিত হয়।

প্রতিষ্ঠা : কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় 1914 খ্রিস্টাব্দের 27 মার্চ। কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

 কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠায় যাদের নাম স্মরণীয় তারা হলেন ব্যারিস্টার স্যার তারকনাথ পালিত ও ব্যারিস্টার স্যার রাসবিহারী ঘোষ। তারা সাড়ে 37 লক্ষ টাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমি দান করেন।

             মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেন। তা ছাড়া রানি বাগেশ্বরী ও গুরুপ্রসাদ সিং এই কলেজের জন্য অর্থসাহায্য করেন।

পঠনপাঠন :-   এই কলেজে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যা প্রভৃতি বিষয় পড়ানো হত।

a. এখানে 1915 খ্রিস্টাব্দে রসায়ন বিভাগ চালু হয়।

b. 1916 খ্রিস্টাব্দে বিশুদ্ধ পদার্থবিদ্যা বিভাগ ও ফলিত গণিত বিভাগ শুরু হয়।

c. 1918 খ্রিস্টাব্দে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ ও 1919 খ্রিস্টাব্দে প্রাণীবিদ্যা বিভাগ শুরু হয়।

এই কলেজের পঠনপাঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন বিখ্যাত বিজ্ঞানী। যেমন— রসায়ন বিভাগে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, পদার্থবিদ্যা বিভাগে চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন, ফলিত গণিত বিভাগে মেঘনাদ সাহা ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখ বিজ্ঞানীরা। এই কলেজে মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তিপ্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।

 উপসংহার:-ভারতে বিজ্ঞান শিক্ষার ইতিহাসে কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে। পরবর্তীকালে ভারতে যে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ ঘটেছে কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ ছিল তারই পথপ্রদর্শক।

 বসু বিজ্ঞান মন্দির :     

                         ভারতে বিজ্ঞান চর্চায় যে সমস্ত ব্যাক্তি উল্লেখযোগ্য ভুমিকা নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু। তিনি 1917 খ্রিস্টাব্দে বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রধানত, জীব এবং জড় বস্তুগুলির বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করা ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এটি ‘বোস ইন্সটিটিউট’ নামেও পরিচিত ছিল।

প্রতিষ্ঠাঃ- 1915 খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্র বসু প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে 1917 খ্রিস্টাব্দে বসুবিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বিজ্ঞানের নির্দিষ্ট শাখায় মৌলিক গবেষণা করার জন্য তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন। 

পাঠ্যবিষয়ঃ- এখানে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ছাড়াও মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশবিদ্যা, অ্যানিম্যাল ফিজিয়োলজি, বায়োইনফরমেটিক্স প্রভৃতি বিষয়গুলি। নিয়ে গবেষণার সুযোগ আছে। এমনকি এখানে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা এবং গবেষণা করা যায়। অবদান ও বসুবিজ্ঞান মন্দির বিভিন্ন বিষয়ে তার অবদান রেখেছে। যেমন—কলেরার টিকা আবিষ্কারে কিংবা উদ্ভিদের যে প্রাণ আছে তার প্রমাণে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তা ছাড়া আধুনিক মলিকিউলার বায়োলজির সূচনা হয় এখানে। ‘আয়োনোসিটাল ফসফেট’ চক্রের আবিষ্কার এখানেই ঘটেছিল। জগদীশচন্দ্র বসুর বহু পাণ্ডুলিপি ও মিউজিয়াম এখানে রয়েছে। এখানকার কৃতী গবেষকেরা এখান থেকে এস. এস. ভাটনগর পুরস্কার, হোমি জাহাঙ্গির ভারা ফেলোশিপ প্রভৃতি পেয়ে থাকেন। আর্থিক সাহায্য ও প্রাথমিক পর্বে জগদীশচন্দ্র বসু তার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এই প্রতিষ্ঠানকে 30 কোটি টাকার তহবিল দান করা হয়।

উপসংহার:- বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণা ও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বসুবিজ্ঞান মন্দির উল্লেখযোগ্য ছাপ রেখেছে। বিজ্ঞানের গবেষণা ও প্রসারে তাই এর অবদানকে আমাদের ভুললে চলবে না।

 2.মানুষ প্রকৃতি ও শিক্ষার সমন্বয় বিষয়ে রবীনাথের চিন্তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।

অথবা রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা বিশ্লেষন কর।

ভুমিকাঃ-উনিশ শতকে মেকলে মিনিট-এর মাধ্যমে বাংলাদেশসহ ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চলে উইলিয়াম বেন্টিং পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকরী করে। এই শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে বাস্তব জীবনের কোন মিল না থাকায় অনেক রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদরা এই শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি এই শিক্ষার একজন তীব্র সমালোচক ছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে ঔপনিবেশিক শিক্ষাঃ-

i)যান্ত্রিকতা- তার মতে তৎকালীন ভারতের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে কোন প্রানের যোগ ছিলনা। তার মতে এই ধরনের শিক্ষা শিক্ষার্থীদের নিষ্ক্রিয় যন্ত্রে পরিনত করে। লিখেছেন যে “ছেলেদের মানুষ করে তোলার জন্য যে যন্ত্র তৈরি হয়েছে তার নাম ইস্কুল এবং সেটার মধ্য দিয়ে মানবশিক্ষার সম্পূর্ণতা হতে পারে না। রবীন্দ্রনাথ এই যান্ত্রিক শিক্ষা থেকে মুক্তি চেয়েছিলান।

ii) একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার শিক্ষা :-

তার মধ্যে ভারতের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে দেশের নাড়ির যোগ নেই।তার মতে এটা ছিল একটা প্রকাণ্ড ছাঁচে ঢালা ব্যাপার। দেশের সব শিক্ষারীতিকে এক ছাচে শক্ত করে জমিয়ে দেওয়া হবে, যাতে দেশবাসীর বুদ্ধি-বৃত্তির ওপর সম্পূর্ণ একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়।সুতরাং এই শিক্ষা ব্যবস্থা হলো কেরানিগিরি কল।

iii) জাতীয়তা বিরোধীঃ-

এই শিক্ষা জাতীয়তা বিরোধী কারণ এটি সম্পূর্ণ পাশ্চাত্য আদর্শের অনুসরণ , ধার করা বিদ্যার পুনরাবৃত্তি ঘটায়। এখানে যা শিখানো হয় তার ফলে পড়া পাখি বুলি পড়া পাখির গতানুগতিক দল সৃষ্টি হয় এবং তারা হয় বিদেশের গুলি মুখস্থ করা খাঁচার পাখি।”

 শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা :-

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উপরোক্তভাবে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিরোধিতা করে সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি শিক্ষা দর্শনের পরিকল্পনা করেছেন এবং তার পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের কাছ থেকে যে কুড়ি বিঘা জমি কিনেছিলেন সেখানে 1901 খ্রীষ্টব্দের 22শে ডিসেম্বর 5 জন ছাত্র নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শান্তিনিকেতন।  

 শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ::

প্রকৃতির কাছাকাছি আদর্শ পরিবেশের মধ্যে শিশুদের বড় করে তুলতে হবে। রবীনাথ ঠাকুর প্রাচীন ভারতের আশ্রমিক শিক্ষার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এবং এবং শান্তিনিকেতনের সেটার প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন। তিনি বলতেন শিক্ষক শ্রদ্ধার সঙ্গে জ্ঞান বিতরন করবেন আর শিক্ষার্থী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।এর মাধ্যমে তিনি গুরু ও শিষ্যের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন।

ক) সৃজনশীল কাজ :: তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের ওপর জোর দিয়েছিলেন। এবং সেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের উৎসব পালন করার ব্যবস্থাও করেন। তিনি বলতেন এসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে।

 খ) শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠাঃ-তপোবনের আদর্শে বিশ্বাসী হয়েও তিনি পাশ্চাত্যের জড় সভ্যতাকে অশ্রদ্ধার চোখে দেখেননি। তিনি বলেছেন যে পূর্ব ও পশ্চিম এর চিত্ত যদি বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে উভয় ব্যর্থ হবে।বাস্তবে ঘটেছেও তাই। এই জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করে তাকে বিশ্বাজাতীর মিলন ভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তিনি বিশ্বভারতী্তে বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটাতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি এখানে চীন-জাপান ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্ডিতদের নিয়ে এসেছিলেন।

প্রকৃতি মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় ::

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তায় প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় ঘটেছিল। তিনি শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করে প্রকৃতি মানুষ ও শিক্ষা বিষয়ে হাতে কলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। রবীন্দ্রনাথের মনে করতেন যে শিক্ষা হবে মুক্ত প্রকৃতির কোলে মুক্ত আকাশের নিচে। চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তিনিও খোপওয়ালা বড় বাক্স বলে অভিহিত করেছেন। তার উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃতির কাছে থেকে আদর্শ প্রাকৃতিক পরিবেশে শিশু ও কিশোরদের বড় হতে সাহায্য করা। রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন যে প্রকৃতির সংস্পর্শে শিশুর দেহ মন সুগঠিত হয়। শিশুদের পরম সত্তাকে নিবিড় ভাবে অনুধাবন করতে পারে।

রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা চিন্তায় মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয়-

রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন শিক্ষা এমন হওয়া উচিত যাতে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে ব্যবধান তৈরি হবে না। এজন্যই শান্তিনিকেতনের সঙ্গে আশেপাশে গ্রামগুলির যোগাযোগ ছিল। গ্রামের মানুষের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি ও সকলের মিলন ক্ষেত্র হিসেবে পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলায় আশেপাশের গ্রামের মানুষেরা তাদের ঘরোয়া সামগ্রী যেমন মাটির হাড়ি,বেতের তৈরি ধামা,কুল্‌ লোহার তৈরি করা কড়াই হাতা প্রভূতি বিক্রি করে। তাছাড়া জমিতে উৎপন্ন ফসলও তারা বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। আছে অর্থাৎ বিশ্বভারতীর শিক্ষা ছিল মানবতাবোধের শিক্ষা, মূল্যবোধের শিক্ষার যে শিক্ষা আজকের সমাজের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

উপসংহারঃ- রবীন্দ্রনাথ বুঝতে পেরেছিলেন ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় মানুষের চারিত্রিক বলিষ্ঠতা, মনের প্রসারতা ও বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। তাই তিনি ব্রিটিশ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন এবং শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতী গড়ে তোলে মনুষ্যত্ববোধের শিক্ষার জন্ম দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।আর এটাই হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষা যা তার শিক্ষাচিন্তা ও দর্শনের মূল কথা।

 3.রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তার শান্তিনিকেতন ভাবনা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

   অথবা, বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাচিন্তার পরিচয় দাও।

👉উত্তর :: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে নিজের শিক্ষাচিন্তার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের কাছ থেকে 20 বিঘা জমি নিয়ে 1863 খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে রবীন্দ্রনাথ 1901 খ্রিস্টাব্দের 22 ডিসেম্বর পাঁচজন ছাত্র নিয়ে ব্ৰত্মচর্যাশ্রম’নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ধাপে ধাপে এই শান্তিনিকেতনেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠা করেন।

রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন ভাবনা :-

i)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নিজস্ব শিক্ষাচিন্তার ভিত্তিতে শান্তিনিকেতনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি চেয়েছিলেন প্রকৃতির কাছাকাছি আদর্শ পরিবেশের মধ্যে শিশুদের বড়ো করে তুলতে হবে।

ii)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন ভারতের আশ্রমিক শিক্ষার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের শান্তিনিকেতনে রেখে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

iii) রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে গুরু ও শিষ্যের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। তিনি বলতেন, শিক্ষক শ্রদ্ধার সঙ্গে জ্ঞান বিতরণ করবেন আর শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধার সঙ্গে।তা আহরণ করবে।

iv)রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে শিক্ষার্থীদের সৃজনমূলক কাজের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। এখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের উৎসব পালন করারও ব্যবস্থা করেন। তিনি বলতেন, এসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে।

এই বিদ্যালয়ে গতানুগতিক সময়তালিকার বিশেষ গুরুত্ব ছিল না। শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুসারে তা নির্ধারণ করা হত।।

শান্তিনিকেতনে বিশ্বভাৱতী প্রতিষ্ঠা :-রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠা করে তাকে বিশ্বজাতির মিলনভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তিনি বিশ্বভারতীতে বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটাতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি এখানে চিন, জাপান, ইউরোপ, আমেরিকা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্ডিতদের নিয়ে এসেছিলেন।

শান্তিনিকেতনে প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় ঘটানো:-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় ঘটাতে চেয়েছিলেন। এজন্য শান্তিনিকেতনের ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষের বাইরে প্রকৃতির মধ্যে গাছের তলায় শিক্ষা দেওয়া হত। তা ছাড়া শান্তিনিকেতনের সঙ্গে পাশাপাশি গ্রাম ও তার মানুষদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাই শান্তিনিকেতনের শিক্ষা হয়ে উঠেছিল মানবতাবোধের শিক্ষা।

উপসংহার:-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই শান্তিনিকেতনে 1921 খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন ভাবনা শুধু বাংলা বা ভারতে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে একদিকচিহ্ন হয়ে আছে। দেশ-বিদেশের বহু ছাত্র ও শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।


৪) বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। (Development of Technical Education in Bengal)

👉

ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে বাংলায় পাশ্চাত্য ধাঁচের কারিগিরি শিক্ষার অস্তিত্ব ছিল না । ঊনিশ শতক থেকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার ও বিজ্ঞান শিক্ষার অগ্রগতি ঘটে ও সেই সঙ্গে বাংলায় কারিগরি শিক্ষার দ্রুত প্রসার ও অগ্রগতি শুরু হয় । ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে বাঙালি কারিগর গোলকচন্দ্র ইংল্যান্ড থেকে আগত বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আদলে প্রথম কারিগরি যন্ত্র তৈরি করেন । ব্রিটিশরা তাদের নিজেদের সামরিক প্রয়োজনে ইলেকট্রিক টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা চালু করেন । এই ইলেকট্রিক টেলিগ্রাফের লাইন পাতার কাজে ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে বাঙালি কারিগর শিবচন্দ্র নন্দী উল্লেখ্যযোগ্য কৃতিত্বের পরিচয় দেন । মহেন্দ্রনাথ নন্দী কাপড় বোনার যন্ত্র তৈরি করেন । বাঙালি কারিগররা অচিরেই আধুনিক কারিগরি প্রযুক্তিবিদ্যা শেখার দিকে মনযোগ দেন । রাজকৃষ্ণ কর্মকার জলচক্র, বন্দুক, মেশিনগান তৈরিতে নিপুনতার পরিচয় দেন । প্রসন্নকুমার ঘোষ কলকাতায় প্রথম সাইকেল ও রিক্সা নির্মাণ করেন । ইলেকট্রিক কারিগর কালিদাস শীল নানা ধরনের নতুন নতুন বৈদ্যুতিক সাজ-সরঞ্জাম তৈরিতে বিশেষ পারদর্শিতার পরিচয় দেন । বিপিনবিহারী দাস সর্বপ্রথম ভারতে একটি সম্পূর্ণ মোটরগাড়ি তৈরি করেন ।

উনিশ শতকের শেষদিক থেকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও দেশীয় সংবাদপত্রগুলি ভারতে কারিগরি শিক্ষাবিস্তারের দাবিতে সরব হয় । এর পরিণতি হিসাবে কলকাতায় কারিগরি শিক্ষার বিস্তারের উদ্দেশ্যে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে 'অ্যাসোসিয়েশন ফর দি অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল এডুকেশন' গড়ে তোলা হয় । স্কলারশিপ দিয়ে এদেশের যোগ্য ছাত্রদের কারিগরি শিক্ষালাভের জন্য এই অ্যাসোসিয়েশন ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানে পাঠায় । কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুর টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপিত হয় । ব্রিটিশ সরকার শিল্প বিষয়ক টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনে উৎসাহ দেখালে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে । সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সতীশ চন্দ্র মুখার্জীর প্রতিষ্ঠিত ডন সোসাইটিতেও বেসরকারিভাবে শিল্প ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারের উদ্যোগ নেওয়া হয় । ডন সোসাইটিতে কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক ও উন্নতমানের পাঠক্রম চালু ছিল । এখানে শিক্ষানবীশদের যান্ত্রিক কৌশলের বিষয়ে শিক্ষাদান করা হত । ডন সোসাইটি ছাড়া ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ও বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট -এর প্রচেষ্টায় বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ ঘটে।।


------------সমগ্র অংশটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ----------------






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দশম শ্রেণীর ইতিহাস :: প্রথম অধ্যায়

দশম শ্রেণীর ইতিহাস ( তৃতীয় অধ্যায়)