মহাজনপদ

 


মহাজনপদ-এর আভিধানিক অর্থ "বিশাল সাম্রাজ্য" (সংস্কৃত "महा"-মহা = বিশাল/বৃহৎ, "जनपद"-জনপদ = মনুষ্যবসতি = দেশ)। বৌদ্ধ গ্রন্থে বেশ কয়েকবার এর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৌদ্ধ গ্রন্থ অঙ্গুত্তরা নিকায়া‌ মহাবস্তুতে ১৬টি মহাজনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তারের পূর্বে ভারতের উত্তর-উত্তর পশ্চিমাংশে উত্থিত এবং বিস্তৃত হয়। এগুলো হল-----


(১) অঙ্গ (বর্তমান পূর্ব বিহারের মুঙ্গের ও ভাগলপুর),


(২) মগধ (বর্তমান দক্ষিণ বিহারের পাটনা, গয়া এবং সাহাবাদের কিছু অংশ),


(৩) বৃজি (বর্তমান বিহারের গঙ্গানদীর উত্তর দিকের অঞ্চল),


(৪) কাশী (বর্তমান উত্তর প্রদেশের বারাণসী),


(৫) কোশল (বর্তমান উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা),


(৬) মল্ল (বর্তমান উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া, বস্তি, গোরক্ষপুর এবং সিদ্ধার্থ নগর ),


(৭) চেদি (যমুনা ও নর্মদার মধ্যবর্তী অঞ্চল),


(৮) বৎস (বর্তমান উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ ও মির্জাপুর ),


(৯) কুরু (বর্তমান থানেশ্বর, দিল্লি ও মিরাট অঞ্চল ),


(১০) পাঞ্চাল (বর্তমান উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল, বেরিলি, বদায়ুন ও ফরক্কাবাদ),


(১১) মৎস (বর্তমান রাজস্থানের আলোয়ার, ভরতপুর ও জয়পুর অঞ্চল ),


(১২) সুরসেন (বর্তমান উত্তর প্রদেশের মথুরা),


(১৩) অস্মক (বর্তমান গোদাবরীর দক্ষিণতীর),


(১৪) অবন্তী (বর্তমান মালয়),


(১৫) গান্ধার (বর্তমান পাকিস্তানের পেশোয়ার ও রাওয়ালপিন্ডি)


(১৬) কম্বোজ (দক্ষিণ-পশ্চিম কাশ্মীর)।


এই মহাজনপদ গুলির অধিকাংশ রাজতান্ত্রিক হলেও, দু-একটি রাজ্যে (যেমন-বৃজি ও মল্ল) প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল । রাজনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারের জন্য রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা লেগেই থাকতো । ক্রমে চারটি রাজ্য (মগধ, কোশল, অবন্তি ও বৎস) অপর রাজ্য গুলিকে গ্রাস করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে । তারপর সাম্রাজ্য গঠনের জন্য ঐ চারটি রাজ্য যুদ্ধে লিপ্ত হয় । অবশেষে মগধ এই যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ভারতে প্রথম একটি ঐক্যবদ্ধ সাম্রাজ্য স্থাপন করে।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দশম শ্রেণীর ইতিহাস :: প্রথম অধ্যায়

দশম শ্রেণীর ইতিহাস ( পঞ্চম অধ্যায়)

দশম শ্রেণীর ইতিহাস ( তৃতীয় অধ্যায়)