ভারতের ইতিহাসের যুগ বিভাজন
ভারতের ইতিহাসে যুগবিভাগ একটি জটিল ও বিতর্কিত বিষয়। প্রাচীন ঐতিহ্য পুরানে চক্রাকার কালচেতনা বিদ্যমান। কিন্তু ইউরোপীয় ধারণায় সময় হল রৈখিক। আধুনিক ইতিহাসচর্চায় অবশ্য এই রৈখিক কালচেতনাকেই গ্রহণ করা হয় এবং সেই ভাবেই ইতিহাসের যুগ বিভাজন করা হয়।
পুরাণ :
পুরাণ অনুসারে ঐতিহ্য 'কাল'কে চারটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে- সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলি। সত্যযুগ সবচেয়ে উৎকৃষ্ট যুগ এবং কলিযুগ সবচেয়ে ঘৃণ্যতর। প্রতিটি পরবর্তী যুগ তার পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় অবক্ষয়িত। সামাজিক অক্ষয়ের চূড়ান্ত পর্ব কলিযুগে বিষ্ণুর কল্কি অবতারে আগমন ঘটবে এবং কলিযুগের সমাপ্তির মধ্য দিয়ে আবার সত্য যুগের সূচনা হবে।
অন্যদিকে ইউরোপে 14 শতকীয় রেনেসাঁ প্রসূত ধারণা পুরাণের ঐতিহ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। পেত্রার্ক তার রচনাবলীতে নবজাগরণ এর আগের সময়কালকে 'অন্ধকার যুগ' হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন এবং বর্বরদের আক্রমণের পূর্বের সময়কে ধ্রুপদী যুগ হিসাবে চিহ্নিত করে সেখান থেকেই শুরু করার কথা বলেছেন। এভাবে সভ্যতার গতিপথের একটি পর্বকে বাড রাখার ধারণা পরবর্তীকালে বাতিল হয়েছে। যাইহোক পেট্রার্ক রৈখিক কাল চেতনা এবং ত্রিপদী যুগ বিভাজনের বিশ্বাসী।
ভারতের ইতিহাসের আধুনিক যুগ বিভাজন
যুগ বিভাজনের আধুনিক ধারা অনুযায়ী ভারতের ইতিহাসের বিভাজন গুলি হল----
১) প্রাচীন ভারতের ইতিহাস। (প্রস্তর যুগ থেকে ১২০৬ সাল পর্যন্ত)
২) মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাস।( ১২০৬ থেকে ১৭৫৭ বা ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত )
৩) আধুনিক ভারতের ইতিহাস। (১৮৫৭ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত )
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসকে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়-
১) প্রাক-ঐতিহাসিক যুগ।( ২০ লক্ষ থেকে ৪০০০B.C)
২) প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ।(৪০০০ থেকে ১৫০০B.C )
৩) ঐতিহাসিক যুগ।( ১৫০০ থেকে ৬০০ মতান্তরে ৩২৬ B.C)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন